গাইবান্ধায় বাণিজ্যিকভাবে আবাদ হচ্ছে সূর্যমুখী

আমাদের প্রতিদিন
2024-03-27 23:04:29

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

রবি মৌসুমে গাইবান্ধার বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে নজর কাড়ছে সবুজের সমাহার। এরই ফাঁকে হলদে রঙে সেজে উঠেছে কৃষকের মাঠ। শীতের সূর্যের ঝলকানিতে ঝলমল হাসিতে রাঙিয়েছে খেত। যেন হাসিমুখে সূর্যে দিকে আলো ছড়াচ্ছে সূর্যমুখী।

সরেজমিনে গতকাল মঙ্গলবার এমনই এক চিত্র দেখা যায়, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হাসিলকান্দি গ্রামে। যমুনার চরে যেন টগবগ মেজাজে সূর্যের মুখ করে হাসছে সূর্যমুখী। কৃষকের এই শস্যখেতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ফুলপ্রেমীরা করছে ছোটাছুটি।

জানা যায়, হাসিলকান্দি গ্রামের মৃত আলহাজ মফিজ উদ্দিন সরকারের ছেলে আলতাফ হোসেন সরকার। এক সময়ে ছিলেন কলেজ অধ্যক্ষ। শিক্ষকতা থেকে অবসর নিয়ে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষি ফসল উৎপাদনে। নানা ফসল ফলানোর পাশাপাশি এ বছরে বাণিজ্যিকভাবে আবাদ করেছেন সূর্যমুখীর। এ ফসলের দানা থেকে উৎপাদন হয় ভোজ্যতেল। এটির চাহিদা থাকায় ৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই খেতের গাছে ফুল এবং ফুলে বীজ আসা শুর হয়েছে। খেতের সূর্যমূখীর সবুজ গাছে গাছে বড় গোলাকারের হলুদ ফুল চারিদিকে যেন এক অপরূপ দৃশ্য ছড়িয়েছে। প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে প্রকৃতির সৌন্দর্য পিয়াসু মানুষ সূর্যমুখী ফুলের দৃশ্য দেখতে আসছে।

স্থানীয় কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সূর্যমুখী সারা বছরে চাষ করা যায়। তবে রবি মৌসুমে ভালো হয়। সূর্যমুখী সাধারণত সব মাটিতে আবাদ করা যায়। এর বীজ সারিতে বুনতে হয়। হেক্টারপ্রতি ৮ থেকে ১০ কেজি বীজ লাগে। বীজ বোনা থেকে প্রায় ১০০ দিনের মধ্যে এ ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। এতে প্রায় ২ টন দানা সংগ্রহ করা যেতে পারে। এ ফসল থেকে তেল উৎপাদন ছাড়াও গরু-মহিষের খাবার হিসেবে খৈল তৈরি হয়ে থাকে। গাছ ও পুষ্পস্তবক জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।

সূর্যমুখীর খেত দেখতে আসা মুন্নি আক্তার, সাগর মিয়া ও আখি খাতুন বলেন, থোকা থোকা ফুলে ভরা সূর্যমুখীর সৌন্দর্যে আমরা মুগ্ধ হয়েছি। অপরূপ এই দৃশ্য ফোনের ক্যামারায় ধারণ করে রাখলাম।

কৃষক আলতাফ হোসেন সরকার জানান, লাভজনক ফসল হিসেবে সূর্যমুখীর আবাদ করেন তিনি। ৫ বিঘা জমিতে এটি চাষ করছেন। বীজ-সার-শ্রমিকসহ অন্যান্য ব্যয় হবে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। ফলন ও বাজার দাম ভালো থাকলে প্রায় লক্ষাধিক টাকা লাভ থাকবে তার।

গাইবান্ধা জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বেলাল উদ্দিন বলেন, সূর্যমুখী চাষ অত্যন্ত লাভজনক। কৃষকদের আরও লাভবান করতে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আলতাফ হোসেন সরকারকেও সহযোগিতা করা হচ্ছে।