ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ পাইপ লাইন প্রকল্পের  উদ্বোধন

আমাদের প্রতিদিন
2024-03-29 00:48:26

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

মুসলিমুর রহমান (পার্বতীপুর, দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

অনেক চড়াই উৎরাই ও প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফেন্ডসশীপ পাইপ লাইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ শনিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে সাড়ে ৫টার সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এর মধ্যদিয়ে ভারতে রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান নুমালীগড় রিফাইনারী লিমিটেডের শিলিগুড়ীস্থ মার্কেটিং টার্মিনাল হতে পাইপালাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর ডিপোতে জ্বালানী ডিজেল তেল সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে ২০১৮ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডসশীপ পাইপ লাইন নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন। আজকের এই মাহেন্দ্রক্ষন উপলক্ষে পার্বতীপুর রেলহেড ডিপোর পাশে স্থাপিত রিসিপ্ট টার্মিনালটি বর্ণীল সাজে সাজানো হয়। রাস্তার দু’ধারে শহর পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ডিজিটাল ফেস্টুন ও ব্যানারে সজ্জিত করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩’শ ৬ কোটি টাকা। পার্বতীপুর উপজেলা মিলনায়তনে ভিডিও কনফারেন্স প্রদর্শনে এক জমকালো আয়োজন করা হয়। ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিতে যারা উপস্থিত হন তারা হলেন স্থানীয় সাংসদ সাবেক মন্ত্রী এড. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের অপারেশন ও পরিবহন পরিচালক অতিরিক্ত সচিব খালিদ আহাম্মেদ, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের বিপনন পরিচালক যুগ্ম সচিব অনুপম বড়–য়া, যমনা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গিয়াস উদ্দিন আনসারি, পদ্মা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মাসুদুর রহমান, মেঘনা পেট্রোলিয়াম কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবু সালেহ্্ ইকবাল পদ্মা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালন ব্যবস্থাপক মোঃ আব্দুল সোবহান এবং পাইপ লাইন প্রকল্পের মহা ব্যবস্থাপক (এম.ডি) টিপু সুলতান, জেলা প্রশাসক খালিদ মোহাম্মদ জাকী, পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহাম্মেদ, পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক, ও পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন। এছাড়াও পার্বতীপুর ডিপোতে কর্মরত তিন কোম্পানির কর্মকর্তাসহ ভারত অংশের কর্মকর্তাবৃন্দ। এ পাইপ লাইন নির্মান প্রকল্পের আওতায় মোট ১৩১.৫৭ কি.মি. পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ১২৬.৫৭ কি.মি. এবং ভারত অংশে ৫ কি.মি. পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ভারত সরকার আইবিএফবিএল এর ভারতীয় অংশের ৫ কি.মি. পাইপ লাইন এবং বাংলাদেশ অংশের ১২৬.৫৭ কি.মি. পাইপ লাইন নির্মানে অর্থায়ন ও কারিগরি সহযোগীতা প্রদান করেছে। বাংলাদেশ অংশে এই আপদকালীন তেল ডিপো নির্মানের ফলে প্রতিকুল পরিস্থিতে নির্বিঘেœ জ্বালানী তেল আমদানি ও গ্রহণ নিশ্চিত হবে। পূর্বে রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে ৬০ থেকে ৭০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানী করা যেত। বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী বার্ষিক প্রায় ২.৫ লক্ষ মেট্রিক টন ডিজেল ভারত থেকে আমদানি করা সহজতর হবে। পার্বতীপুর রেলহেড ডিপোর জ্বালানী তেলের চাহিদা পূরণের জন্য প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে নৌপথে খুলনার দৌলতপুর ডিপোতে তেল সরবরাহ করা হতো। পার্বতীপুর রেলগেড ডিপো থেকে ৮’শ থেকে ১ হাজার মেট্রিক জ্বালানী তেল উত্তরের ১৬ জেলাতে সরবরাহ করা যাবে। এই রিসিপ্ট টার্মিনাল নির্মানের ফলে পার্বতীপুরে অতিরীক্ত ২৯ হাজার মেট্রিক টনের জ্বালানী তেলের মজুদ বৃদ্ধি পেয়ে মজুদ ক্ষমতা দাড়াবে ৪৩ হাজার মেট্রিক টন।