রংপুরে দুই নারীর নেতৃত্বে রোকেয়া দিবস

আমাদের প্রতিদিন
2024-04-19 18:04:55

 

সবুজ আহম্মেদ, (মিঠাপুকুর) রংপুর:

মহিয়সী নারী ও বাঙ্গালী নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন। পশ্চাৎপদ ও কু-সংস্কারপূর্ণ সমাজে নারীদের মুক্তির জয়গান গেয়েছেন। নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নের সর্ব প্রথম বীজ বপন করেছিলেন তিনি। নানা প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে কাজ করেছেন সমাজ সংস্কারে। একাধারে সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, চিন্তাবীদ, প্রবন্ধিক ও সমাজ সংস্কারক ছিলেন রোকেয়া। তিনি নারী-পুরুষের সমকক্ষতার যুক্তি দিয়ে নারীদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় আহহ্বান জানিয়েছেন এবং শিক্ষার অভাবে নারীদের পশ্চাৎপদতার কারণ বলেছেন। রোকেয়া চেয়েছিলেন নারীদের কু-সংস্কার মুক্ত, নারী-পুরুষের সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন। রংপুরের মিঠাপুকুরে জন্মগ্রহন করা ক্ষণজন্মা এই নারীর আজ জন্ম ও মৃত্যু দিবস।

মহিয়সী এই নারীর কর্ম ও আদর্শকে লালন করে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস উদ্যাপন এবং বিশিষ্ট নারীদের বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করে। রংপুর জেলা ও মিঠাপুকুর উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে রোকেয়ার বাস্তভিটায় দিবসটি উদযাপন করে থাকেন। এ উপলক্ষে ৩ দিন ব্যাপি আলোচনা সভা, সেমিনার, চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলাসহ নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালিত হয় রোকেয়া দিবস। এবারেই প্রথম রোকেয়া দিবসের উদযাপনে দায়িত্বে রয়েছে দুই নারী কর্মকর্তা। রংপুর জেলা প্রশাসনের প্রথম নারী প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন ও মিঠাপুকুর উপজেলা প্রশাসনের প্রথম নারী ইউএনও ফাতেমাতুজ জোহরা পুরো আয়োজনটি তত্বাবধানে রয়েছেন।

দুই নারী কর্মকর্তা ব্যস্ত সময় পার করছেন রোকেয়া দিবসকে নিয়ে। ডিসেম্বর মাস শুরু পর হতে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষে। এরমধ্যে রোকেয়ার বাস্তভিটায় মেলার আয়োজন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য মঞ্চ তৈরী, কীর্তিমান নারীদের সম্মাননা প্রদান ও বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র ধোয়ামোছার কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ৯, ১০ ও ১১ ডিসেম্বর হবে মুল আয়োজন। সকল আয়োজনের তত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করছেন এই দুই নারী কর্মকর্তা। বিষয়টিতে রোকেয়া স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃষ্টিতে দেখছেন সচেতন মহল।

রোকেয়া স্মৃতি সংসদের সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, রোকেয়া চেয়েছিলেন নারী-পুরুষের সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, নারীদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাবলম্বিতা। সেটি আজ পূরণের পথে। রংপুর জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন ও মিঠাপুকুর ইউএনও ফাতেমাতুজ জোহরা পুরো আয়োজনটির দায়িত্বে থেকে রোকেয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত। মিঠাপুকুর জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান, নারী সংগঠক ও  স্থানীয় প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নাসরীন দিলারা আফরোজ পল্লবী বলেন, এবারে রোকেয়া দিবসের পুরো আয়েজনটি দু’জন নারীর নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। এটি নারীর ক্ষমতায়নের একটি মাইলফলক।

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়া পায়রাবন্দের নিভৃতপল্লীতে জন্মগ্রহন করেছেন। তিনি চেয়েছিলেন নারী শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়তে। শত বছর পরে সমাজে এসেছে নারী-পুরুষের সমতা। সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ কাধে কাধ মিলিয়ে দেশ ও বিদেশে সাফল্য অর্জন করছেন। নিজ কর্মক্ষেত্রে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন। রোকেয়া দিবসে পুরো আয়োজনটি তত্ত¡াবধান করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।