তারাগঞ্জে ফাজিলপুর  মৌলভীপাড়া দাখিল মাদ্রাসায়  খাতা-কলমে ২৪২ জন শিক্ষার্থী  উপস্থিত ১৩

আমাদের প্রতিদিন
2024-07-27 07:31:34

তারাগঞ্জ (রংপুর)  প্রতিনিধি:

তৃতীয় শ্রেণী, চতুর্থ শ্রেনী, পঞ্চম শ্রেনীতে কোন শিক্ষার্থীই আসেনি শুধু মাত্র একটি শ্রেনী কক্ষের ভিতরে ষষ্ট শ্রেনীর ২জন শিক্ষার্থী, সপ্তম শ্রেনীর ৮জন ও নবম শ্রেনীর ৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে পাঠদান দিচ্ছেন ৩জন শিক্ষক এমন অবাস্তব ঘটনাটি রংপুরের তারাগঞ্জ ফাজিলপুর মৌলভীপাড়া দাখিল মাদ্রাসার চিত্র। এই মাদ্রাসায় খাতা-কলমে ২৪২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও উপস্থিত পাওয়া গেছে তিন শ্রেণীতে মাত্র ১৩ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষক উপস্থিত ১৩ জন । মাদ্রাসার সুপারের দায়িত্বের অবহেলা ও সঠিকভাবে ক্লাস না হওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী উপস্থিতির এমন বেহাল দশা হয়েছে বলে শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই প্রতিষ্ঠানে এবদেদায়ী শাখায় ১ম শ্রেণীতে ২০ জন, ২য় শ্রেণীতে ২৪ জন, ৩য় শ্রেণীতে ২০ জন, ৪র্থ শ্রেণীতে ২০ জন, ৫ম শ্রেণীতে ১৫ জন এবং দাখিল শাখায় ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ২৮জন, ৭ম শ্রেণীতে ৪৫ জন, ৮ম শ্রেণীতে ২৫ জন, ৯ম শ্রেণীতে ২৫ জন, ১০ম শ্রেণীতে ২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ১৬জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে এবতেদায়ী শাখার ৪জন, দাখিল শাখার ৯ জন শিক্ষক এবং ৩ জন কর্মচারী রয়েছে।

গতকাল সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দুপুর সাড়ে ১২ টায় মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা গেছে, মাদ্রাসায় দ্বিতল ভবনের নীচ তলায় পুরাতন ৪টি কক্ষ আছে এবং দ্বিতীয় তলায় নতুন করে আরো ৪টি কক্ষ নির্মান করা হয়েছে। নীচতলার ৪টির মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ,অষ্টম শ্রেনী ও দশম শ্রেনী তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। একটি শ্রেনী  কক্ষে তিনজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিচ্ছেন এমন দৃশ্যে দেখে শ্রেনী কক্ষে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেলো ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ২জন, ৭ম শ্রেণীর ৮জন এবং ৯ম শ্রেলীর ৩জনসহ মোট ১৩ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে নেয়া হচ্ছে তিন শ্রেণীর ক্লাস। এসময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষক জানায়, খাতা কলমে শিক্ষার্থী থাকলেও তারা মাদ্রাসায় আসছে না। শিক্ষার্থীও উপস্থিতি কম থাকায় একই কক্ষে ৩ শ্রেনীর পাঠদান দেয়া হচ্ছে। এসময় কথা হয় ওই মাদ্রাসার সহকারি মৌলভী শিক্ষক জিয়াউর রহমান জিয়ার সাথে। তিনি বলেন, আজ এবতেদায়ী শাখার ৯৯ জন শিক্ষার্থীর একজনও আসেনি। আর দাখিল শাখার ৮ম ও ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা আসেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকাবাসীর বেশ কয়েকজন জানান, মাদ্রাসা সুপার আব্দুল আউয়াল সাহেব প্রায় দিনেই তারাগঞ্জে গিয়ে সময় কাটায়। মাদ্রাসা সঠিকভাবে তিনি আসেন না। এ মাদ্রাসায় লেখাপড়াও তেমন হয় না। একারনে শিক্ষার্থী নেই। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার আব্দুল আউয়ালের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ভার্চ্যুয়াল মিটিংয়ে সংযুক্ত আছেন তাই কথা বলতে পারবেন না বলে জানান। ওই মাদ্রাসার সভাপতি সিরাজুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মাদ্রাসায় গিয়ে এ বিষয়ে শিক্ষকদের সাথে কথা বলতে হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেহেনা বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এবতেদায়ী কোন শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় আসেনি। গ্রামে একটি ঘটনা ঘটেছে তাই। অন্য শ্রেনীতে কম বেশি আছে বলে মোবাইল কেটে দেয়। পরে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, তিনটি শ্রেনী মিলে মাত্র ১৩ জন শিক্ষার্থী দিয়ে ক্লাস চলছে আবার অন্য শ্রেনী গুলোর কোন শিক্ষার্থীই আসেননি বিষয়টি কেমন যেন। শুনলাম বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে খতিয়ে দেখবো। ###১১-০৯-২০২৩ইং।