৭ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২০ এপ্রিল, ২০২৪ - 20 April, 2024
amader protidin

বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে রেকর্ড ৮.১৪ শতাংশ সূচক রিটার্ন কমেছে

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
241


 

ঢাকা অফিস:

স্থানীয় এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় বাংলাদেশের শেয়ারবাজারেও বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল সূচক, ডিএসইএক্স সমাপ্ত ২০২২ সালে ৮.১৪ শতাংশ নেতিবাচক সূচক রিটার্নের রেকর্ড করেছে। যা আগের বছর ২০২১ সালে রিটার্ন ছিল ২৫.০৮ শতাংশ ইতিবাচক।

শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক শেয়ারবাজার মন্দার অন্যতম কারণ দেশের দুর্বল ম্যাক্রো অর্থনীতি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর ফলে দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি এবং বছর শেষে ফলাফল নেতিবাচক হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

এদিকে সদ্য বিদায়ী ২০২২ সালে, ইন্দোনেশিয়ার পুঁজিবাজার ৬.৯৮ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন দিয়েছে। যা এশিয়ার অন্যান্য দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। ইতিবাচক রিটার্ন দেওয়ার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত। দেশটির শেয়ারবাজারে সূচক রিটার্ন দিয়েছে ৪.৪২ শতাংশ।

এছাড়া অন্যান্য দেশগুলো নেতিবাচক ধারায় বছর পার করেছে। এর মধ্যে অন্যতম ভিয়েতনামের সর্বোচ্চ ৩২.২৩ শতাংশ কমেছে। ফিলিপাইন ২১.৭৩ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ১৭.৩৮ শতাংশ, পাকিস্তান ৯.৭০ শতাংশ, মালয়েশিয়া ৯.৬৫ শতাংশ এবং থাইল্যান্ড ৪.১১ শতাংশ। শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের বার্ষিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

বিদায়ী বছর ২০২২ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মূল সূচকটি ৫৪৯.৮ পয়েন্ট বা ৮.১ শতাংশ কমে ৬,২০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। যা বছরের প্রথম দিন ৬,৮৫৩ পয়েন্ট ছিল।

এর আগে বিশ্বব্যাপী প্রতিকূলতা যেমন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার পূর্বাভাসের প্রভাব ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে ২০২২ সালে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কঠিন ছিল।

কোভিড-১৯-এর প্রভাব থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের আশাবাদের কারণে বছরের প্রথম দিকে ইতিবাচক ধারায় চলেছে। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের আশঙ্কায় পুঁজিবাজারে তীব্র সঙ্কট তৈরি হয়ে এই গতি বেশিদিন টিকেনি। যার কারণে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সার্কিট ব্রেকার আরোপ করতে বাধ্য হয়েছে যাতে বাজার স্থিতিশীল থাকে।

কিন্তু মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব ডলারের ঊর্ধ্বগতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং প্রায় সারা বছরই ব্যাঙ্কগুলো আমদানি বিল পরিশোধে সমস্যার সম্মুখীন হয়, যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যবসা ও ভোক্তাদের প্রভাবিত করে। 

বৈদেশিক মুদ্রার বাজারকে শীতল করার জন্য একাধিক উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও ২০২২ সালে মার্কিন ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার ২৪.৪১ শতাংশ অবমূল্যায়ন করা হয়েছিল। এর ফলে রপ্তানিকারকরা লাভবান হলেও আমদানিকারক ও ভোক্তারা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা ডলার ঘাটতির কারণে পণ্য বা কাঁচামাল আমদানিতে অসুবিধার সম্মুখীন হয়।

পুঁজিবাজারে পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হতে থাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করে ২০২২ সালের জুলাইয়ের শেষ নাগাদ বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস আরোপ করতে বাধ্য হয়। সেটাও বেশি দিন সুফল দেয়নি। 

এরপর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সম্প্রতি বাজারে তারল্য বাড়ানোর জন্য ১৬৯ কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইস সীমাবদ্ধতা তুলে নিয়েছে। কিন্তু তাদের শেয়ার দাম ১ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না এমন সিদ্ধান্তের কারনে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়েনি এর ফলে গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ এ এক দিনের টার্নওভার ৩৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে আসে। এই পতনমুখী বাজার থেকেই বিদায় নিয়েছে ২০২২ সাল।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়