কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি  হলেও দুর্ভোগ কমেনি মানুষের

আমাদের প্রতিদিন
2025-04-24 17:33:07

আহসান হাবীব নীলু,কুড়িগ্রাম:

কুড়িগ্রামে বন্যায় পানিবন্দী দুই লক্ষাধীক মানুষ আর পাশাপাশি বন্যা আক্রান্ত গবাদিপশু, হাঁস মুরগীর সংখ্যা ৫৮ হাজার ২৯৮টি। এসব গবাদিপশু ও হাঁস—মুরগীর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বন্যার্ত মানুষ নিজের নানা কষ্টের পাশাপাশি গো—খাদ্য সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গত ৮দিন ধরে জেলার ৯ উপজেলায় ৫৫টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় এ অবস্থা বিরাজ করছে।

জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোনাক্কা আলী জানান—চলতি বন্যায় জেলায় গবাদিপশু ও হাঁস—মুরগী পানিবন্দি হয়েছে ৫৮ হাজার ২৯৮টি। এর মধ্যে গরু ১০হাজার ৮১৫টি, মহিষ ৪৫৭, ছাগল ৪ হাজার ৯২৭, ভেঁড়া ১ হাজার ৮১৬, হাঁস ৫ হাজার ৫০৩টি ও মুরগী ৪৪ হাজার ৫৮০টি। প্লাবিত চারণভূমির পরিমান ৪৯২ একর, খড় ক্ষতি হয়েছে ১১৬ মে. টন। বন্যার সময় গবাদিপশুর বিভিন্ন রোগব্যাধি হয়। এ জন্য আমরা ২০টি মেডিকেল টিম গঠন করেছি। গরুর ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ৫ হাজার ৫৫০ টি, হাঁস—মুরগীর ১০ হাজার ৫২০টি, এছাড়া ২ হাজার ৫২০টি গবাদিপশুর বিভিন্ন চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে । গবাদিপশুর খাদ্যের ব্যাপারে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেবো।

বন্যার্ত ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রয়োজনের অপ্রতুল হলেও সরকারি —বেসরকারি ভাবে বানভাসীদের ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু গবাদিপশুর জন্য কেউ খাদ্য সহায়তা করছেন না। অনেক পরিবারের একমাত্র সম্বল গবাদিপশু। তারা বন্যার কারণে গরু,মহিষ,ছাগল,ভেঁড়া,হাঁস ও মুরগী নিয়ে বিপাকে আছে। তাদের ঘরে যে গো—খাদ্য মজুদ ছিল তা শেষ হয়েছে বা প্রায় নষ্ট হয়েগেছে। ফলে গবাদিপশুর খাদ্য নিয়ে বিপাকে সবাই।

 সরেজমিনে দেখা যায়— পাঁচগাছি, যাত্রাপুর ইউনিয়নের নিম্নঅঞ্চলের বাড়িঘরে পানি ওঠায় বন্য আশ্রয়কেন্দ্র,বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে ও পাকা রাস্তায় রাস্তায় ও গোয়াইলপুরী চরে মাদ্রাসার উঁচু মাঠে গরু ,ছাগল বেঁধে রেখেছে এবং অনেক বানভাসী পরিবার সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের গরুগুলোকে সামান্য কিছু খড় খেতে দিয়েছে। গরুর সংখ্যা হিসেবে খড় একবারেই কম। ফলে গবাদিপশুগুলো রুগ্ন হয়েযাচ্ছে।

বানভাসী জহির উদ্দিন, আমজাদ ও আব্দুল লতিফ জানান, আমরাই তিনবেলা ঠিক মতো খেতে পারি না। গরু—ছাগলকে কি খাওয়ামো।  সবখানে পানিতে থৈ থৈ। তাই সরকারি পাকা রাস্তা ও চরের উঁচু জায়গায় গবাদিপশু  রাখছি। প্রাকৃতিক কোন খাবার নেই কারণ মাঠ—ঘাট সবই পানির নীচে। সামান্য কিছু খড় ছিল তা এ কয়দিন অল্প অল্প করে খাওয়ানো হইছে। গরু—ছাগলগুলো ঠিক না খেতে পেরে রুগ্ন হয়েছে।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন— বন্যার পানি একটু কমতে শুরু করেছে। কিন্তু গো—খাদ্য নিয়ে বানভাসীরা খুব সংকটে আছে। বন্যা শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত আমার ইউনিয়নে কোন প্রকার গো—খাদ্য সরবরাহ করা হয়নি।