মর্নেয়ার মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশী অভিযানে কোনঠাসা

2025-12-07 13:41:33

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রংপুরের গঙ্গাচড়া থানার মাদকের অভয়ারণ্য খ্যাত মর্নেয়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের অব্যাহত অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ফলে গত ৮ মাসেই মর্নেয়া এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ মাদক ব্যবসায়ী মাদক ব্যবসা ছেড়ে উপার্জনের ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় এলাকার জনগণ সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে।

স্থানীয়রা জানায়, গঙ্গাচড়া উপজেলার প্রায় ৮০ শতাংশ মাদকের ব্যবসা হতো মর্নেয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্পটে। সেখানে রাস্তার ধারে ও বিভিন্ন মাদক স্পটে খোলা বাজারে  আলু, পটলের মত খুচরা ও পাইকারি  মাদক বিক্রি হত। থানা পুলিশের অব্যহত  অভিযান ও কঠোর পদক্ষেপের কারণে  বর্তমান অবৈধ মাদক ব্যবসার এরকম কোন  খোলা বাজারের অস্তিত্ব নাই।

স্থানীয় মিঠু (৪০) ও স্বপন (৩২) জানান, মর্নেয়া ইউনিয়নে মাদক সেবনের প্রায় ১৫-২০ টি স্পট ছিল। এগুলোর মধ্যে ফেরদৌসের  স্পট, হামিদুলের স্পট, রশিদুলের স্পট অন্যতম। ওই স্পটগুলোতে ছিল টিনের চালার মধ্যে বাঁশের চৌকি। যেখানে দিন রাত রংপুর জেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত মাদকসেবীরা আড্ডা দিত  এবং প্রকাশ্যে মাদক সেবন করত। বর্তমানে মাদক সেবনের কোন স্পট মরনেয়া ইউনিয়নে নাই। গঙ্গাচড়া  থানা পুলিশের বর্তমান ওসি আসার পর থেকে ওই মাদক সেবনের স্পটগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।

মর্নেয়া খলিফার বাজার এলাকার সাইদুল ইসলাম জানান, এ ইউনিয়নের প্রতিদিন বিকেল ৪ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত প্রায় এক থেকে দেড় হাজার বহিরাগত মোটরসাইকেল রংপুর জেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মর্নেয়া ইউনিয়নের তালপট্টি, ভাঙ্গাগড়া, শেখের বাজার, মাসুদার মোড়সহ মাদকের স্পটগুলোতে অবাধে চলাফেরা করে মাদক সেবনসহ মাদক ক্রয়-বিক্রয় করতো। মোটরসাইকেল আরোহীরা ছিল বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ। নারী মাদক সেবীরাও অবাধে মাদক সেবন করত।

এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আল এমরান জানান, মর্নেয়া ইউনিয়ন মাদকমুক্ত করতে পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে। মাদকের বিভিন্ন স্পট গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বহিরাগত মোটরসাইকেল আরোহীদের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা ও চেকপোস্ট বসিয়ে তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়েছে। ফলে বহিরাগত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের  যাতায়াত বন্ধ হয়েছে। বর্তমানে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বহিরাগত কোন মোটরসাইকেল  অকারনে মর্নেয়া ইউনিয়নে প্রবেশ করে না। 

তিনি আরো জানান, মর্নেয়া এলাকাটি তিস্তা নদীর  তীরবর্তী, বিস্তৃত চর ও  পাঁচটি থানার (হারাগাছ, কাউনিয়া, লালমনিরহাট সদর, আদিতমারি এবং কালীগঞ্জ) সীমান্তবর্তী হওয়ায় কিছু অসাধু মাদক ব্যবসায়ী অত্যন্ত সুকৌশলে খুবই স্বল্প পরিসরে  মাদক ব্যবসা চালানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে থানা পুলিশের কঠোর নজরদারি অব্যাহত আছে। বর্তমানে ৩ পর্যায়ে কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ওই এলাকায় মাদকদ্রব্যের অবৈধ ব্যবসার প্রায় ৯০ শতাংশ  নিয়ন্ত্রণ  করা সম্ভব হয়েছে।