গঙ্গাচড়ায় শালিস বৈঠকে পেটে চাকু ঢুকিয়ে বড় ভাইয়ের আত্মহত্যা, ছোট ভাই আটক

আমাদের প্রতিদিন
2024-10-04 05:03:39

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি:

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় শালিস বৈঠকে পেটে চাকু ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করেছেন হামিদুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবক। রোববার (১ অক্টোবর) সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায়

গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের মৌভাষা বামনটারী গ্রামে নিজের পেটে চাকু ঢুকিয়ে জখম করেন হামিদুল। এ ঘটনায় ছোট ভাই রুবেলকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, হামিদুল  প্রায় এক বছর ধরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।  কয়েক বছর ধরে তিনি ঢাকা শহরে তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন এবং সেখানে একটি ছোট্ট মুদির দোকান করতেন। কিছুদিন আগে তার চাচাতো ভাই রুবেল মিয়াকেও সেখানে নিয়ে গিয়ে  তার দোকানের পাশে থাকা একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে দেন। কিছুদিন দোকান করার পর লোকসান হয়েছে জানিয়ে রুবেল ব্যবসা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। কিন্তু দোকান ছাড়তে হলে হামিদুল তিন মাসের ভাড়া দাবি করেন রুবেলের কাছে।

হামিদুলের মুখে এ কথা শুনে রুবেল গত শুক্রবার সকালে তার গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। রুবেলের বাড়ি যাওয়ার খবর শুনে হামিদুলও ওইদিন  সন্ধ্যায় বাড়িতে আসেন এবং রুবেলের কাছে ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে তাদের পরিবারের লোকজন  শুক্রবার সন্ধ্যায় শালিস বৈঠকে বসেন। এসময় হামিদুল ও রুবেলের বাবা পরামর্শ করে তিন মাসের দোকান ভাড়া ১২ হাজার টাকা হামিদুলের হাতে তুলে দেন। কিন্তু  হামিদুল ১২ হাজার টাকা না নিয়ে ৮০ হাজার টাকা দাবি করে রুবেলকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। পরে রুবেল হামিদুলকে ৮০ হাজার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে হামিদুল তার কোমরে থাকা চাকু হাতে নিয়ে রুবেলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। এসময় উপস্থিত লোকজন হামিদুলকে বাঁধা দিয়ে তার হাতে থাকা চাকুটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন হামিদুল তার হাতে থাকা চাকু  নিজের পেটে ঢুকিয়ে দেন।

পরে ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন হামিদুলকে চিকিৎসার জন্য রংপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে তার মৃত্যু হয়।

গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল হোসেন জানান, মৃত হামিদুলের চাচাতো ভাই রুবেলকে আটক করা হয়েছে এবং হামিদুলের বাবা আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।