ঘোড়াঘাটে ভ্যানচালক মেহেদুল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে চাঞ্চল্যকর ভ্যানচালক মেহেদুল ইসলাম (৪০) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় দেড় মাস পর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে দিনাজপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় চালকের ভ্যান ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আজ রবিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মাসুম। তিনি জানান, ভ্যান ছিনতাই করতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে তাকে হত্যা করে। তিনি আরও জানান, ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে ব্যর্থ হওয়ায় জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহম্মেদের নির্দেশে মামলার তদন্তভার ডিবিকে প্রদান করা হয়। ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহেদুল ইসলাম দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত দুজনকে শনাক্ত করে গত শনিবার রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে আসামীদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা আসামিরা হলেন, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার শেরপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে লেচু মিয়া (৩৫) ও একই গ্রামের এনতাজ মন্ডলের ছেলে ইদু মন্ডল (২৫)।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ভ্যান ছিনতাই করতে আসামীরা গত ১৫ অক্টোবর পীরগঞ্জ জেলার চতরা বাজারে বসে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী পরের দিন ১৬ অক্টোবর সন্ধায় ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারে আসে এবং স্থানীয় দোকান থেকে ১০ টাকার রশি কিনে কয়েক খন্ড করে নেয়। এরপর সেখান থেকে নূনদহ ঘাটে যাওয়ার জন্য নিহত ভ্যানচালক মেহেদুলের ভ্যানটি ভাড়া করে। যাত্রাপথে ভ্যানে থাকা আসামীরা প্রসাব করার জন্য ফাঁকা রাস্তায় ভ্যানটিকে থামাতে বলে।
এরপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ভ্যানচালকের হাত-পা রশি দিয়ে ও মুখে গামছা পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে রাস্তার পাশের আবাদি জমিতে তার লাশ ফেলে রেখে ভ্যান এবং চালকের মোবাইলটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গ্রেপ্তার আসামী লিচু মিয়া তার সাথে থাকা সঙ্গীদের ১২ হাজার টাকা দিয়ে ছিনতাই করা ভ্যানটি নিজেই নিয়ে কিনে নেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর সকাল ৮ টার সময় ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামে রাস্তার ধারে আবাদী জমি থেকে মেহেদুল ইসলামের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ভ্যানচালক মেহেদুল একই ইউনিয়নের আবদুল্লাহপাড়া গ্রামের মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। একই দিন নিহতের স্ত্রী আফরোজা বেগম (৩৬) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ঘোড়াঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।