৫ মাঘ, ১৪৩১ - ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ - 18 January, 2025

গঙ্গাচড়ায় তিস্তার তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি, ফসলী জমি, রাস্তা, ব্রীজ-কালভার্ট

আমাদের প্রতিদিন
6 months ago
367


নির্মল রায়, গঙ্গাচড়া (রংপুর):

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় উজানের পাহাড়ী ঢলে রাক্ষুসী রুপ ধারণ করেছে তিস্তা নদী। তীব্র স্রোতে ঘরবাড়ি, ফসলী জমি, রাস্তা, ব্রীজ-কালভার্ট ভেসে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মানুষজন। পানিবন্দী তিস্তাপাড়ের প্রায় ৪ হাজার পরিবার দূর্ভোগে পড়েছে। এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। বিপাকে পড়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে নৌকার মাধ্যমে উদ্ধার কার্যক্রমের ব্যবস্থা ও আশ্রয় কেন্দ্র তৈরী রেখেছে প্রশাসন।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকাল ৬টা তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর বেলা বাড়ার সাথে সাথে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। বেলা ১২টায় এ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিকেল থেকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করে। সন্ধ্যা ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে করে  গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালী, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ, লহ্মীটারী, গজঘন্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়নের  প্রায় ৪ হাজার পরিবার  পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

এছাড়া মর্ণেয়া ইউনিয়ন লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। ইউনিয়নের শেখপাড়ায় যোগাযোগের একমাত্র ব্রীজ তিস্তার পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে। স্রোতের গতি কমিয়ে আনতে এলাকাবাসী গাছের গুড়ি, বাঁশ পানিতে ফেলে ঘরবাড়ি রক্ষার চেষ্টা চালিয়েছেন। তিস্তায় পানি বৃদ্ধির ফলে শেখপাড়া ও ভাঙ্গাগড়ায় দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। ভাঙ্গাগড়া গ্রামে প্রায় ৫০ মিটার পাকা রাস্তা পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে রাস্তাটি নালায় পরিণত হয়েছে।

নরসিং চরের মশিয়ার, জাহেদুল সাইদুল, রফিকুল বলেন, আজ সকালে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি ও তীব্রস্রোতে আমাদের ঘরবাড়ি পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে। বাড়ির কিছু আসবাবপত্র নিতে পেরেছি। তিস্তা নিমিষেই আমাদের সব কিছু কেড়ে নিল।

গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টি ও বন্যায় উপজেলার ৫০টিরও বেশি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

এদিকে বিকেলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান উপজেলার মর্ণেয়া ও গজঘন্টা ইউনিয়নের বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় বন্যা ও ভাঙ্গনের শিকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নিদের্শনা দিয়েছেন তিনি। সেই সাথে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য সার্বক্ষনিক নৌকার ব্যবস্থা করেছেন জেলা প্রশাসক। এরপর গজঘন্টা ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিত দুই শতাধিক মানুষের মাঝে চালসহ শুকনা খাবার বিতরণ করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হাবিবুল ইসলাম রুমি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার  নাহিদ তামান্নাসহ অন্যরা।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth