২৯ বৈশাখ, ১৪৩২ - ১২ মে, ২০২৫ - 12 May, 2025

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মুখোমুখি অবস্থান ইটপাটকেল নিক্ষেপ, আহত ২

আমাদের প্রতিদিন
9 months ago
456


বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

বেরোবি প্রতিনিধি:

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রোববার দিবাগত রাতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সহস্রাধিক শিক্ষার্থী মিছিল বের করেন। মিছিল শেষে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এসময় দুপক্ষের উত্তেজনার মধ্যেই ঢিল ছোরাছুরিতে অন্তত ৫ জন এর মতো আহত হন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, রোববার (১৪ জুলাই) দিবাগত রাত ২টায় মহাসড়কে মিছিল শেষে আমরা ক্যাম্পাসে ফিরে এসেছিলাম। মেয়েদের হলে পৌঁছে দিয়ে যার যার মতো মেস বা হলে যাচ্ছিলাম। এসময় আগে থেকেই দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে প্রস্তুত থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রলীগকে ধাওয়া করে। ছাত্রলীগ তখন ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। আমাদের অনেকেরই গায়ে আঘাত লেগেছে। এসময় তাদের প্রতিহত করতেই আমরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করি। কয়েকজন আহত হওয়ায় তাদের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বেরোবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কারী শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, রাতেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছি। শেষমুহূর্তে ছাত্রলীগ অযাচিতভাবে আমাদের ওপর আক্রমণ করে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। বিচার চাই।

এ বিষয়ে বেরোবি ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন, আমাদের কাছে মেসেজ আসে বহিরাগতরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ক্যাম্পাসে আসছেন। তখন আমরা হলের শিক্ষার্থীরা হলের পাশে অবস্থান নেই, যাতে কোনও বহিরাগত হলে যেতে না পারে। বহিরাগতরা নিজেদের রাজাকার বলছিলেন আর আমাদের ভুয়া বলছিলেন। হলের শিক্ষার্থীরা নিজেদের বাঙালি বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এসময় বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা করে। যাত্রী ছাউনি ভাঙচুর করেন। বহিরাগতরা কীভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকে ভাঙচুর করলো এর সুষ্ঠু তদন্ত হোক।

এর আগে রোববার রাত সাড়ে ১১টা থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে স্লোগান দিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শহীদ মুখতার ইলাহি হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল থেকে ভেসে আসে স্লোগানের আওয়াজ। এসময় তারা মিছিল বের করেন। মিছিলটি নিয়ে শিক্ষার্থীরা রংপুরের মর্ডান মোড়, দর্শনা, লালবাগ, পার্ক মোড় হয়ে আবারও মর্ডান মোড়ে গিয়ে অবস্থান করেন।

এসময় মিছিল থেকে শিক্ষার্থীদের ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘কীসের তোমার অধিকার, তুমি একটা রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে, সরকার সরকার’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, চীন ফেরত পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্রিক এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? তাদের নাতি-নাতনিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা পাবে? এটা দেশবাসীর কাছে আমার প্রশ্ন। তাদের অপরাধটা কী? নিজের জীবন বাজি রেখে, নিজের পরিবার সব ফেলে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, দিনরাত খেয়ে না খেয়ে, কাদামাটি পেরিয়ে, ঝড়বৃষ্টি সব মোকাবিলা করে যুদ্ধ করে এ দেশে বিজয় এনে দিয়েছিলেন। তারা বিজয় এনে দিয়েছিলেন বলেই তো আজ সবাই উচ্চপদে আসীন। আজ গলা বাড়িয়ে কথা বলতে পারছেন। তা না হলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে থাকতে হতো।’

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth