দিনাজপুর জেলা ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ অফিস ভাংচুর : আহত ৫০
দিনাজপুরে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যাপক সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটেছে। এসময় কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগ, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের অফিস ভাংচুর ও অন্তত ১৫টি মোটরসাইকেল ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। আহত হয়েছে অন্তত ৫০ জন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দিনাজপুর শহরে শাট ডাউনের কর্মসূচি চলাকালে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাসবক লীগের একাংশের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পান্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপ অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রনক্ষেত্রে পরিনত হয়েছিল শহরের চারুবাবুর মোড়সহ আশপাশের এলাকা। সংঘর্ষে পৌর কমিটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নওশাদ ইকবাল কলিন্সসহ উভয়পক্ষের ৫০ জন আহত হয়েছে। এসময় ক্ষুব্ধ মিছিলকারিদের হামলায় রাস্তার পাশে দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগ এবং দিনাজপুর সদর ও পৌর আওয়ামীলীগের কার্যালয় ভাংচুর তছনছ করাসহ কমপক্ষে ১৫ টি মোটর সাইকেল ভাংচুরসহ আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে হালকা লাঠিচার্জসহ কয়েকটি টিয়ারশেল সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
এর আগে বেলা ১১টায় শহরের দিনাজপুর জিলা স্কুলের সামনে জড়ো হয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ বের করে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা। দিনাজপুর শহরের লিলিমোড় হয়ে মিছিল চারুবাবুর মোড়ে পৌছালে মিছিলটিকে প্রতিরোধের চেষ্টা করে ছাত্রলীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। এসময় শুরু হয় উভয়পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ হাতাহাতির ঘটনা। এসময় এক পর্য্যায়ে আওয়ামী লীগের দিনাচজপুর জেলা আওয়ামীলীগ, সদর উপজেলা ও কোতয়ালী আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে হামলা চালায় মিছিলকারিরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে টিয়ারসেল এবং কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। দুপুর পৌনে ৩টা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে শহরের এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বিক্ষোভ মিছিলসহ খন্ড খন্ড সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়া বিক্ষোভকারিরা জড়ো হয়ে আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে আরেক দফা হামলা চালিয়ে দলীয় কার্যালয়সহ ১৫ টি মোটর সাইকেলে আগুন দেয়, নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শাটডাউন কর্মসূচির কারনে ভোর থেকে শহরের রাস্তার মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধিনে টহলে নিয়োজিত রয়েছি বিজিবি সদস্যরা।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানিয়েছেন, কোটা বিরোধী ছাত্র বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে নাশকতামুলক কর্মকান্ডে অংশ নিয়েছে বিএনপি ও জামায়াত। পুলিশ যখন বিক্ষোভকারিদের ছত্রভঙ্গে ব্যস্ত ছিলেন, এসময় সরকারি কলেজ থেকে হাজার দেড়েক শিক্ষার্থী এসে আওয়ামীলীগ পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছে।
অন্যদিকে দুরপাল্লারসহ গন পরিবহন চলাচল করেনি। তবে স্বাভাবিক ছিল ট্রেন চলাচল। খুলেনি বেশীর ভাগ দোকানপাট। স্থবির হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা।