১ কার্তিক, ১৪৩১ - ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ - 16 October, 2024

সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫ দফা দাবি নিয়ে রাবির প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের অবস্থান কর্মসূচি

আমাদের প্রতিদিন
2 months ago
108


রাবি সংবাদদাতা:

শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগসহ অনাকাঙ্ক্ষিত হতাহতের ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে এবং দেশব্যাপী নৈরাজ্য, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে সরকারের ৫ দফা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫ দফা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ।

বুধবার (৩১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় সরকারের কাছে ৫ দফা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে ৫ দফা দাবি জানান তারা।

সরকারের প্রতি ৫দফা দাবি নিম্নরূপ:

১.কোটা সংস্কার আন্দোলনকালে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত হতাহতের ঘটনার তদন্তসাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।

২.দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৩.সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও দুর্ভোগ বন্ধ করতে হবে।

৪. কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে জড়িত কিন্তু কোন অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে।

৫. দেশব্যাপী নৈরাজ্য, অগ্নিসন্ত্রাস ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫দফা দাবি নিম্নরূপ:

১. ক্যাম্পাসে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

২. ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলোতে বিধি অনুযায়ী মেধা ও জেষ্ঠ্যতারভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে।

৩. কোনো রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক সংগঠনের নামে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও তাদের যেন কোনো অমর্যাদা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ও বৈধ ছাত্র ছাড়া অন্য কেউ আবাসিক হলে অবস্থান করতে পারবে না।

৫. কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো আইনী বা অন্য কোনো হেনস্থার শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. এক্রাম উল্লাহ সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক সরকার বলেন, এই আন্দোলনকে ঘিরে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছে এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে তা কোনোভাবেই কাম্য না। এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। আমরাও শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করছি। কিন্তু আদালতের রায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে হওয়ার পরেও একদল কুচক্রী মহল ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। যতদিন বিশ্বিবদ্যালয় বন্ধ থাকবে ততদিন তৃতীয় পক্ষ বেশি সুযোগ পাবে। কোটা দাবি যৌক্তিক, আমরা সবাই এর পক্ষে ছিলাম এখনো আছি।

আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু নাসের মো. ওয়াহিদ বলেন, যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো কারোরই কাম্য নয়। একটি মহল ছাত্রদের আন্দোলনকে পুঁজি করে তারা সরকার পতনের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। অবশ্যই আমাদের ভুল ছিল, ভুল স্বীকার করতেই হবে। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সংকট নিরসন করতে হবে আমাদের।

শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে একাত্তরের পরাজিত শক্তি তারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর ইমেজকে ধংস করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে তারা। পুরোনো শকুন আবারো খামছে ধরেছে আমাদের পতাকা। তারা আবারো বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর পায়তারা চালাচ্ছে। তারা আমাদের জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চায়। যারা আগুন-সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে

এসময় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ১০ দফা দাবি উত্থাপন করেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মর্যাদা সমুন্নত রাখাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসন সংরক্ষণের জন্য সকল কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এসময় অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth