১৩ দিন কারাবরণের পর রংপুরের শিক্ষার্থী মাহিমের জামিন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় ১৬ বছর বয়সী কলেজ শিক্ষার্থী আলফি শাহরিয়ার মাহিম জামিন পেয়েছেন। কারাগারে যাওয়ার ১৩ দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের বিচারক মোস্তফা কামাল তার জামিন মঞ্জুর করেন।
রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিমের জামিন শুনানির জন্য ৪ আগস্ট দিন ধার্য থাকলেও শিশু হওয়ায় আগাম জামিন দেওয়া হয় তাকে। সে নগরীর আশরতপুর চকবাজার এলাকার স্টুডিও ব্যবসায়ী শাহজালালের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাহিমের আইনজীবী জোবায়দুল ইসলাম বুলেট। তিনি বলেন, মামলাটি মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায় ছিল। মাহিম শিশু হওয়ায় মামলা স্থানান্তর হয়েছে। এর আগে ৪ আগস্ট শুনানির দিন ছিল। কিন্তু আমরা বৃহস্পতিবার নতুন করে শুনানির জন্য আবেদন করেছি। আদালত শুনানি গ্রহণ করে জামিন মঞ্জুর করেছেন। আদালতে কিশোরের পক্ষে আইনজীবী আবদুল মোকছেদ, জোবায়দুল ইসলাম, আবু তাহের আলী, রায়হান কবীর, রোকনুজ্জামান রোকন ও পলাশ কান্তি নাগ শুনানি করেন।
এর আগে গত ১৮ জুলাই বিকেলে আলফি শাহরিয়ার মাহিমকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করে। এরপর থেকে কারাগারে আছেন তিনি। বুধবার মাহিমের বোন সানজানা আখতার স্নেহা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
সানজানা আখতার স্নেহা লিখেছেন, ‘যে ছেলেটা লিগ্যাল ডকুমেন্টস অনুযায়ী শিশু; তাকে তারা কোন হিসাবে এভাবে হ্যারাস (হয়রানি) করাচ্ছে? সব থেকে বড় কথা তার গায়ে কলেজ ড্রেস ছিল। আইডি কার্ড ছিল। সে পুলিশদের ইনস্টিটিউটেরই ছাত্র। এক্ষেত্রে কি তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, সহপাঠী, আইনজীবী কারও কিছুই করার নাই? আমার ভাইকে কোন লজিকে তারা আটকে রেখেছে, দেখাও করতে দিচ্ছে না!’
মাহিমের মা আঞ্জুমান আরা ময়না বলেন, আমার কলিজার টুকরা মাহিমের জামিন হয়েছে। তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা শুধু জামিন নয় এই মামলা থেকে অব্যাহতি চাই। তিনি প্রশাসন ও মিডিয়া কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিন পুলিশের উপ—পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, ‘১৮ জুলাই যখন থানায় হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট হয় তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জিন্সের প্যান্ট ও স্যান্ডো গেঞ্জি পড়া অবস্থায় আটক হয় মাহিম। পরে তাকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। বিষয়টি আমাদের নলেজে আসা মাত্রই পুলিশ কমিশনার স্যার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, যেহেতু মাহিম ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল মাত্র। তাই, জামিনের মাধ্যমে তাকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে।