নির্মাণ কাজে বাঁধা দাতার ওয়ারিশদের গঙ্গাচড়ায় বিদ্যালয়ের জমি দখলের অপচেষ্টা
নির্মল রায় গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের মৌভাষা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ জবর দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন জমিদাতার ওয়ারিশরা। গত ২৭ আগষ্ট বিদ্যালয়ের সম্প্রসারিত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ শুরু করতে গেলে দাতার ওয়ারিশরা বাঁধা প্রদান করেন। ফলে নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন বিদ্যালয়টিতে উপস্থিত হলে কথা হয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও মৃত দাতা সদস্য ইসমাইল হোসেনের ওয়ারিশদের সাথে। সকলের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে কর্মচারী পদে নিয়োগ না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এমন উদ্যোগ নিয়েছেন জমিদাতার ওয়ারিশরা।
বিদ্যালয়টির মৃত জমিদাতা ইসমাইল হোসেনের ছেলে চাঁন মিয়া (৩৫) জানান, ২০২২ সালে অত্র বিদ্যালয়ে ৪ জন কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তখন আমি বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি জিল্লুর রহমানের কাছে গেলেও তিনি আমাদের প্রার্থীকে নিয়োগ দেননি। বরং তিনি তার ভাগিনাকে ওই পদে নিয়োগ দিয়েছেন। জমিদাতার অপর ছেলে আব্দুল আউয়াল (৫০) এ সময় জানান, আমার বাবা বিদ্যালয়ে জমি দান করলেও ওই জমির রেকর্ড আমার পিতার নামেই আছে। তাই ওই জমির মালিক আমরাই (ওয়ারিশরাই)। এ সময় দাতা ইসমাইল হোসেনের অন্য ছেলে কেবারত আলী (৫৬), বাশারত আলী (৬০), লিয়াকত আলী টুটুৃল (৫৩), রতন মিয়া (৩০)সহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, দাতা ইসমাইল হোসেন ১৯৭৮ সালে মৌভাষা মৌজার সাবেক ২৭১ দাগের ১১ শতক জমি স্কুলের নামে দানপত্র দলীল (নং-২০৩৩৯/১৯৭৮) মূলে স্কুলকে দান করেছেন। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের কর্মচারী পদে নিয়োগ পাওয়ার আগ্রহ থাকলেও জমিদাতার কোন ওয়ারিশ আবেদন করেননি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম জানান, পরবর্তীতে অত্র বিদ্যালয়ে নিয়োগের সুযোগ তৈরী হলে জমিদাতার ওয়ারিশরা যদি আবেদন করেন, তখন আমি তাকে অগ্রাধিকার প্রদানের জন্য নিয়োগ কমিটিকে সুপারিশ করবো।
প্রধান শিক্ষক আরো জানান, অত্র মৌভাষা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয় ১৯৭৩ সালে। ১৯৮১ সালে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে অত্র এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হলে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম স্থগিত থাকে। পরে জায়গাটি চরে পরিনত হয়ে জনবসতি গড়ে ওঠে। ফলে বিদ্যালয়টি পুনরায় ১৯৯৩ সালে চালু করা হয়। তাই ১৯৮৩ সালের দিয়ারা রেকর্ডের সময় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম অব্যাহত না থাকায় বিদ্যালয়ের নামে জমি রেকর্ড গুরুত্ব পায়নি।