বলিউডের শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চনের আজ জন্মদিন
ফাইল ফটো
বিনোদন ডেস্ক:
আজ ১১ অক্টোবর (শুক্রবার) বলিউডের শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চনের জন্মদিন। ১৯৪২ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৮২ বছর পূর্ণ করে ৮৩ তে পা দিলেন এই মেগাস্টার। অমিতাভ বচ্চনের প্রথম জীবন চাকরির সুবাদে কলকাতায় কেটেছে। এরপর ছোট ভাইয়ের উৎসাহে সিনেমায় সুযোগ পাওয়া যায় কিনা সেই লক্ষ্যে বাক্সপেটরা গুছিয়ে হাজির হন মুম্বাইতে। তিনি মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ ছবিতে ধারাবর্ণনা দিয়ে শুরু হয় সিনেমার ক্যারিয়ার। পরে হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের আনন্দ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। প্রথম ছবিই হিট হয়, তিনি পান সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার। সেই থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি অমিতাভ বচ্চনকে। এর দুই বছর পর ১৯৭৩ সালে বিয়ে করেন অভিনেত্রী জয়া ভাদুড়িকে তিনি কলকাতার মেয়ে । কলকাতায় অবস্থান ও বাঙালি মেয়েকে বিয়ের সুবাদে নিজেকে সব সময় ‘আধা বাঙালি’ বলে দাবি করেন তিনি।
পারিবারিকভাবে ভারতের উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদের এক হিন্দু-শিখ পরিবারে অমিতাভ বচ্চনের জন্ম। তার বাবা হরিবংশ রায় বচ্চন একজন নামকরা হিন্দি কবি ছিলেন। তার মা তেজি বচ্চন ফৈসলাবাদের (এখন পাকিস্তানে) এক শিখ-পাঞ্জাবী। অমিতাভের পদবী ছিল শ্রীবাস্তব, কিন্তু তার বাবা নিজের লেখা প্রকাশের সময় ছদ্ম-পদবী বচ্চন ব্যবহার করায় সেই পদবীটিই তিনি সব জায়গায় ব্যবহার করতে শুরু করেন। এই পদবী নিয়েই অমিতাভ প্রথম ছবির জগতে আত্মপ্রকাশ করেন এবং তার পরিবারের সবাই বাইরের জগতে এই একই পদবী ব্যবহার করেন। হরিবংশ রাই বচ্চনের দুই ছেলের মধ্যে অমিতাভ বড়। তার ছোট ছেলের নাম অজিতাভ রাই। তারকা অভিনয় দম্পতি অভিতাভ বচ্চন-জয়া ভাদুড়ি দুই সন্তানের জনক-জননী। তারা হলেন- শ্বেতা নন্দা এবং অভিষেক বচ্চন। বাবার মতো অতটা তারকা খ্যাতি না পেলেও অভিষেকও বলিউড অভিনেতা। আর তার স্ত্রী ঐশ্বর্য রাই তো বিশ্ব সুন্দরী ও বলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী।
ক্যারিয়ারের দীর্ঘ ৫৩ বছরে ১৯০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। উপহার দিয়েছেন অসংখ্য হিট ছবি। সুপারহিট ‘দো আনজানে’ ছাড়াও ইয়ারানা’, ‘বারসাত কি এক রাত’, ‘দ্য লাস্ট লিয়ার’, ‘পিকু’, ‘তিন’ সহ বেশ কয়েকটি ছবির শুটিং করেছেনে এই শহরে।
অমিতাভ বচ্চন তার কর্মজীবনে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছে ৪টি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ১৫টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কার। তিনি গেম শো ফ্র্যাঞ্চাইজ হু ওয়ান্টস টু বি আ মিলিয়নিয়ার-এর ভারতীয় সংস্করণ কৌন বনেগা ক্রোড়পতি অনুষ্ঠানের কয়েকটি মৌসুমের সঞ্চালনা করেন। ১৯৮০-এর দশকে তিনি রাজনীতিতে জড়ান এবং ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত ভারতীয় সংসদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন।
শিল্পকলায় অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে ভারত সরকার তাকে দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী, ২০০১ সালে তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ এবং ২০১৫ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মবিভূষণে ভূষিত করে। বিশ্ব চলচ্চিত্রে অনন্য কর্মজীবনের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৭ সালে ফ্রান্স সরকার তাকে সে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা লেজিওঁ দনরের নাইট উপাধিতে ভূষিত করে।