চায়না কমলা চাষে সফল তারাগঞ্জের কৃষক আলেপ উদ্দিন
কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগীতায় রয়েছে ৩০টি কমলা ও ১৬০টি মাল্টার বাগান
প্রবীর কুমার কাঞ্চন, তারাগঞ্জ (রংপুর):
প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে হদুল রঙের অসংখ্য কমলা। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিয়ে বের হওয়া কমলার এমতন দৃশ্য চোখ জুড়ায়। অভাবনীয় এক কমলার বাগান করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর সাংবাদিকপাড়া গ্রামের আলেপ উদ্দিন। তার বাগানে চায়নিজ জাতের কমলা খেতে সুমিষ্ট হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
আলেপ উদ্দিনের কমলা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, কমলা বাগানের প্রবেশমুখে দাড়াঁলেই চোখে পড়ে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা হলুদ সবুজ বর্ণের কমলা। প্রতি থোকায় কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০টি কমলা ঝুলে আছে। ১০ ফুট উচ্চুার ৯০টি কমলা গাছ। একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দুরত্ব প্রায় ৫ ফুট। ৩০ শতাংশ জমিতে সারিবদ্ধভাবে লাগানো গাছগুলোর প্রতিটি শাখায় থোকায় থোকায় ঝুলে আছে অসংখ্য কমলা। কিছু কমলা পেকে যাওয়ায় হলুদ রং ধারণ করেছে। কিছু কমলা কাচা থাকায় সবুজ রং রয়ে গেছে। মাগানের মালিক আলেপ উদ্দিনকে কমলাগুলোর পরিচর্যা করতে দেখা যায়। আলেপ উদ্দিন বলেন, বাবার রেখে যাওয়া পৈত্রিক জমি গুলো তিনি সুপারি গাছ ও দেশীয় বিভিন্ন জাতের আম, কাঠাল, জলপাই, লেবু, সজনে গাছ, আমড়া, বড়ই, জাম, লিচু লাগিয়েছেন। এছাড়াও তিনি প্রতিবছর বাঁধা কপি, ফুল কপি, আলু, বেগুন লাগিয়ে থাকেন। কামলা চাষি আলেপ উদ্দিন বলেন, ২০২১ সালে আলেপ উদ্দিন তার বাড়ির সামনেই উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগীতায় লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ এবং ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্দি প্রকল্পের আওতায় পৈত্রিক ৩০ শতাংশ জমিতে ৯০টি চাইনিজ জাতের কমলা রোপন করেন। কমলার বাগান থেকে ২০২৩ সালে মাত্র ২০ হাজার ও ২০২৪ সালে ২ লাখ ৮ হাজার টাকা কমলা বিক্রি করেছেন। এখন প্রায় ৪০ থেকে ৫০হাজার টাকা কমলা বিক্রি করতে পারবেন বলেন আশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি আরো জানান, ছোট সাইজের কমলার প্রচুর চাহিদা থাকায় কমলা বিক্রিতা মহাজন তার বাগানে এসে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এবছর আরো ৬০ শতক জমিতে নতুনভাবে উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগীতায় প্রায় ২০০টি একই জাতের কমলার চারা লাগিয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের দায়িত্বরত এসএএও আবু সায়েম হাসান জানান, প্রথমত কৃষকেরা কমলা চাষ করতে চাইতেন না। তাদের ধারনা ছিলো কমলার চারা জমিতে লাগালেও কমলা আসবে না আর যদিও আসে তাহলে টক হবে তারা কমলা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন না। কিন্তু লেবু জাতের কমলা প্রকল্পটি হয়তো শেষ পর্যায়ে এখন প্রকল্পটি থাকবেনা কিন্তু বর্তমানে কমলার বাগান করে লাভের মুখ দেখে এখন বাগান কমলার বাগান করতে চাচ্ছেন কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিসার ধীবা রানী রায় বলেন, উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে ৩০টি কমলার বাগান, ৩৫ হেক্টর জমিতে ১৬০টি মালটার বাগান এবং ৭ হেক্টর জমিতে লেবুর বাগান প্রদর্শনী হিসাবে রয়েছে। যা উপজেলা কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হয়েছে। উপজেলায় উৎপাদিত কমলা ও মালটা খুবেই মিষ্টি ও সুস্বাদু।