২৮ মাঘ, ১৪৩১ - ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ - 10 February, 2025

ভর্তি পরীক্ষায় ‘কান দৃশ্যমান’ শর্ত বাতিলসহ ৫ দাবিতে মৌন মিছিল

আমাদের প্রতিদিন
5 days ago
55


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাবি সংবাদদাতা:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আসন্ন ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফরমে ‘কান দৃশ্যমান’ শর্ত বাতিল, পরীক্ষার হলে নিকাব খুলতে বাধ্য করা বন্ধ, প্রতিটি ভবনে মেয়েদের নামাজের স্থান নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে মৌন মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হল গেট থেকে মৌন মিছিলটি শুরু হয়ে প্রশাসনিক ভবনে এসে শেষ হয়। পরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন— ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফরমে ‘কান দৃশ্যমান’ শর্ত বাতিল করতে হবে। পরীক্ষার হলে কিংবা ভাইভা বোর্ডে হিজাব-নিকাব পরিহিত ছাত্রীদের নিকাব খুলতে বাধ্য করা যাবে না। পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) চালু করতে হবে এবং তা সম্ভব না হলে নারী শিক্ষিকা বা কর্মচারীর মাধ্যমে পর্দানশীন ছাত্রীদের পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি ভবনে মেয়েদের নামাজের জন্য আলাদা রুম এবং ক্যাফেটেরিয়ায় নারীদের জন্য পৃথক কর্নার রাখতে হবে। হিজাব-নিকাব পরিধানকারীদের বিরুদ্ধে কটূক্তি ও হয়রানি বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অফিসিয়াল নোটিস দিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে এটি সংযুক্ত করতে হবে।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন,

"পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় মহিলা কর্মচারী দিয়ে ভালোভাবে তল্লাশি করানো হলে তো কানে কোনো ডিভাইস নেওয়ার সুযোগ থাকে না। তাহলে কান দেখানোর শর্তের যৌক্তিকতা কোথায়?"

অন্য এক শিক্ষার্থী প্রশ্ন তোলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ে তো পর্যাপ্ত ক্লাসরুম আছে, আমাদের জন্য আলাদা রুমের ব্যবস্থা করা হোক। সেখানে আমরা মুখ খুলে পরীক্ষা দেব। কিন্তু পুরুষদের সামনে কেন আমাদের হিজাব খুলতে বাধ্য করা হবে?"

এক নারী শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,

"পোশাক আমাদের ব্যক্তিগত বিষয়। আমাদের ইচ্ছেমতো পরার অধিকার রয়েছে। অথচ আমাদের বোরকার জন্য প্রায়ই কটাক্ষ করা হয়।"

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, "ধর্ম পালনের অধিকার আমাদের সংবিধান স্বীকৃত। মুসলিম হিসেবে হিজাব আমাদের অধিকার। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে পরিচয় নিশ্চিত করার বিকল্প ব্যবস্থা থাকতে পারে, তাহলে কেন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হবে?"

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, "আমাদের কাছে তারা স্মারকলিপি দিয়েছে। এটি একটি সংবেদনশীল বিষয়। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।

শিক্ষার্থীদের এই দাবি শুধু ব্যক্তিগত স্বাধীনতার বিষয় নয়, বরং এটি ধর্মীয় অধিকার ও নৈতিকতার সঙ্গেও জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়। শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth