৩০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ - ১৩ জুন, ২০২৫ - 13 June, 2025

তথ্য মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সভা নিয়ে দৈনিক যুগের আলোর মিথ্যা, অপ-তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদের প্রতিবাদ, রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের বিবৃতি

2 weeks ago
256


খবর বিজ্ঞপ্তির:

গত ২৬ মে ২০২৫ তারিখে ‘দৈনিক যুগের আলো’ পত্রিকায় ‘আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে উস্কানিদাতা সাংবাদিক জেলা প্রশাসনের সভায়, সাংবাদিকদের মাঝে অসন্তোষ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটিকে মিথ্যা, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং অপ-তথ্য ছড়িয়ে ফ্যাসিবাদকে উসকে দেয়ার মাধ্যমে রংপুরের সাংবাদিকদের মধ্যে বিভাজন তৈরি এবং ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টামূলক বলে অভিহিত করেছে রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজ। সংগঠনটি মনে করে প্রকাশিত সংবাদে পত্রিকাটি সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং ব্যক্তির কোন বক্তব্য না নিয়ে সাংবাদিকতার নীতিপরিপন্থী কাজ করেছেন। এছাড়াও ফ্যাসিবাদি কায়দায় সংবাদ নয়, নিজের মতামত উপস্থাপন করে সাংবাদিকদের হেয়প্রতিপন্ন করেছেন।

বুধবার (২৮ মে) রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের আহবায়ক আব্দুস সাহেদ মন্টু ও সদস্য সচিব লিয়াকত আলী বাদল যৌথ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই দাবি করেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, শিরোনামেই জেলা প্রশাসনের সভা বলা হলেও আলোচনা সভাটির আয়োজক জেলা প্রশাসন ছিল না। আয়োজনটি করেছিল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের তথ্য অধিদপ্তর। জেলা প্রশাসনের সাথে ওই আয়োজনের কোন সম্পর্ক ছিল না। সংবাদটিতে তথ্য অধিদপ্তরের সিনিয়র উপ প্রধান অফিসার জাবেদ ইকবালকে সিনিয়র তথ্য অফিসার হিসেবে বলা হয়। সংবাদটিতে ‘ তার সামনে সাংবাদিকরা ক্ষোভ’ প্রকাশ করেছেন বলে যে কথা বলা হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা।

তাঁরা বিবৃতিতে বলেন, যুগের আলো পত্রিকার সংবাদে ‘তথ্য অধিদপ্তরের সিনিয়র তথ্য অফিসার, জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রংপুরে কর্মরত প্রশাসনের আস্থাভাজন কিছু সাংবাদিক অংশ নেন।’ বলে যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট এবং অপ-তথ্য ছড়ানোর বিষয়ে পত্রিকাটির পুরোনো কৌশল। কারণ ওই আলোচনা সভায় রংপুরে বিদ্যমান প্রতিটি সাংবাদিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ আমন্ত্রিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিইউজের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব ও আরপিইউজে সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নান,  রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ হুমায়ুন কবির মানিক, রিপোর্টার্স ক্লাব, রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলু, রংপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শরিফা বেগম শিউলি, রংপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুব রহমান হাবু, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, রংপুরের সভাপতি মমিনুল ইসলাম রিপন, রংপুর টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি শাহ নওয়াজ জনি ও বর্তমান আহবায়ক আলী হায়দার রনি, রংপুর বৈষম্যবিরোধী সাংবাদিক আন্দোলনের নেতা এমএম জাকির হোসাইনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিল যমুনা টেলিভিশন, সময় টেলিভিশন, একুশে টিভি, বাংলাভিশন, চ্যানেল২৪, নিউজ২৪, এটিএন বাংলা, ডিবিসি, মাছরাঙ্গা টেলিভিশন,  দেশ টিভি, এটিএন নিউজ, আরটিভি, মাইটিভি, মোহনা টিভি, এসএ টিভি, নাগরিক টিভি, গ্লোবাল টিভি, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা, দৈনিক দিনকাল, দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক নয়া দিগন্ত, দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক কালেরকণ্ঠ, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক কালবেলা, দৈনিক খবরের কাগজ, দৈনিক করতোয়া, দৈনিক খবরপত্র, দৈনিক খোলা কাগজ,  ডেইলি নিউ নেশন, ডেইলি অবজারভার, ডেইলি সান, দৈনিক যুগের আলো, দৈনিক পরিবেশ, দৈনিক প্রথম খবর, দৈনিক দাবানল, আমাদের প্রতিদিন, বাংলা নিউজ, বাংলা ট্রিবিউন, ঢাকা ট্রিবিউনসহ অর্ধশতাধিক গণমাধ্যম প্রতিনিধি।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন, কিন্তু উপস্থিত ছিলেন না দৈনিক যুগের আলোর সম্পাদক, দৈনিক দাবানল সম্পাদক, এনটিভি ও সমকালের প্রতিনিধি।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘কিন্তু দৈনিক যুগের আলো উপরোল্লিখিত সাংবাদিকদের নামধারী সাংবাদিক বলে খোদ যুগের আলোর সম্পাদক ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মমতাজ শিরিন ভরসাসহ রংপুরের সাংবাদিকদের হেয়প্রতিপন্ন ও সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, সাংবাদিকতার নীতিমালা পরিপন্থীভাবে নিজেদের বক্তব্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে যুগের আলো। সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তর কিংবা উপস্থিত সাংবাদিকদের বক্তব্য না দিয়ে সাংবাদিকতার আইন-কানুনকে অবজ্ঞা করেছেন। যা অপরাধও বটে।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ যাদের বক্তব্যের ভিত্তিতে যুুগের আলো সংবাদটি করেছে। তাতেও সত্যতা নেই। খণ্ডিত অংশ প্রকাশ করা হয়েছে নিজের ভাষায়। কারণ দৈনিক সংগ্রামের প্রতিনিধি মোহাম্মদ নুরুজ্জামান উপস্থিত সাংবাদিকদের অখ্যাত বলে আখ্যায়িত করলে সেখানে উপস্থিত অর্ধশতাধিক সাংবাদিক এর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সিনিয়র সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে খোদ রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলু তার বক্তব্যে উপস্থিত অতিথিদের কাছে এ বিষয়ে ক্ষমা চেয়ে তার বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু যুগের আলোর একজন স্টাফ রিপোর্টার সেখাানে উপস্থিত থেকেও উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে তা বেমালুম চেপে গেছেন। এবং যুগের আলোর সাংবাদিক লুলু ও সাংবাদিক নুরুজ্জামানের সেখানে উপস্থাপিত বক্তব্য বিকৃত করে এবং খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করে প্রকাশ করেছেন। ’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ আলোচনা সভায় সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান অপর সিনিয়র সাংবাদিক মাহবুব রহমানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছিলেন তার কোন প্রমাণ সেখানে উপস্থাপন করেননি। যুগের আলো তাদের সংবাদেও ওই অভিযোগের কোন তথ্য বা প্রমাণও উপস্থাপন করেনি। যুগের আলো শুধু অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংবাদ পরিবেশন করে মূলত: অভিযোগ সাংবাদিকতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন। যা সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী। আমরা চাই যুগের আলো এ বিষয়ে তথ্যানুন্ধান করে প্রকৃত সত্য উপস্থাপন করুক। তারা যদি সেটি না করেন তাহলে রংপুরের সাংবাদিক সমাজ ধরে নিতে বাধ্য হবে যুগের আলো অপ-তথ্য ছড়িয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্য বিনষ্ট এবং  ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার কাজ করছে।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা মনে করি সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান অপর সিনিয়র সাংবাদিক মাহবুব রহমান হাবুর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন সেটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ। আমরা সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে ব্যাক্তিগত কোন ইস্যু সামনে এনে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা বর্জন করার আহবান জানাই। ’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘সাংবাদিক সমাজ মনে করে গত ১৬ বছর ধরে রংপুর প্রেসক্লাবকে কুক্ষিগত করে রাখার প্রেক্ষিতে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে রংপুরের সকল সাংবাদিকদের জন্য উম্মুক্ত করা এবং যথাযথ সংস্কার করার চলমান প্রক্রিয়াকে ব্যহত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে সেদিন তথ্য মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সভায় বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। এই পক্ষটি এর আগে রংপুর সার্কিট হাউজে সাবেক তথ্য উপদেষ্টার প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে হট্টগোল পাকিয়ে ভণ্ডুল করে রংপুরের সাংবাদিক সমাজকে জাতীর সামনে হেয় করেছে। আমরা এসবের নিন্দা জানাই। এবং সংশ্লিষ্টদের এহেন কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার আহবান জানাই।’ 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth