রংপুরে চালের বস্তায় জাতের নাম ও দাম লিখতে মালিকদের গড়িমসি
সরকারি নির্দেশ উপেক্ষিত
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুর নগরীসহ বিভাগজুড়ে চালের ব্যাগ বা বস্তায় জাতের নাম ও দাম লিখতে গড়িমসি করছেন চালকল মালিকেরা। পয়লা বৈশাখ থেকে চালের বস্তায় জাত, দামসহ বেশ কিছু তথ্য উল্লেখ করে বাজারজাত করার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু সরকারের সেই নির্দেশনা কেউ মানেননি। উল্টো চালকল মালিকেরা সময় বাড়াতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন বলে জানাগেছে। এনিয়ে ক্রেতাসহ সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা কেন চালকল মালিকের মানছে না তা বোধ্যগম্য নয়। তারা যেভাবে সিন্ডিকেট করে রেখে তাতে ক্রেতাসহ সাধারণ মানুষজন অসহায়। এর পরিত্রাণ হওয়া জরুরি।
শনিবার সরেজমিনে উত্তরের বিভাগীয় নগরী রংপুরের সিটি বাজার, মাহিগঞ্জ, লালবাগ, মর্ডাণ, সহ জেলার মিঠাপুকুর, শঠিবাড়ি, পীরগঞ্জ, ভেন্ডাবাড়ি ঘুরে জানাগেছে গেছে, কোনো কোম্পানির চালেই জাত ও মূল্য লেখা নেই। চালের বস্তায় জাত ও মূল্য লেখার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও বাজারে এখনও সেই বস্তা মিলছে না। রংপুর মহানগরীসহ জেলা ও বিভাগের বাজারগুলোতে যেসব চাল বিক্রি হচ্ছে, সেগুলোর কোনো বস্তাতেই জাত ও মূল্য বসেনি এখনো 'আগের চালই' বিক্রি কথা বলছেন বিক্রেতারা।
এদিকে সরকারের বেঁধে দেওয়া সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর মিলাররা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। তাঁরা বলছেন, চালের বস্তায় এসব তথ্য ছাপানোর ডাইস বানাতে অনেক অর্থ ও সময় দরকার। চাল বা ধানের জাত নিশ্চিত করারও বিষয় আছে। তবে বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে এলে সেগুলোর বস্তার গায়ে সরকারের নির্দেশনা মানার কথা বলছেন।
ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূলত সময়ক্ষেপণের উদ্দেশ্যেই এসব যুক্তি দেখানো হচ্ছে। আর খাদ্য অধিদপ্তর বলছে, নতুন নির্দেশনা সম্বলিত চাল বাজারে আসতে লেগে যেতে পারে মাসখানেক।
কয়েকজন ক্রেতা বলেন, বর্তমানে বাজারে তারা যে চালের বস্তা বা ব্যাগ কিনছেন তাতে দাম ও জাত লেখা পাওয়া যায় না। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমত দাম নিচ্ছেন। এতে তারা প্রতারিত হচ্ছেন। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে ক্রেতাসহ সাধারণ মানুষজন কিছুটা স্বস্তি পাবে।
এর আগে এর আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়। মন্ত্রণালয়ের বার্তায় বলা হয়, চালের বস্তায় ধানের জাত ও মিল গেটের মূল্য লিখতে হবে। সেই সঙ্গে লিখতে হবে উৎপাদনের তারিখ ও প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম। উল্লেখ করতে হবে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের অবস্থানও (জেলা ও উপজেলা)। ওজনের তথ্যও থাকতে হবে। চালের বস্তার গায়ে জাত, মিলের ঠিকানা ও দাম লেখার নির্দেশনা না মানলে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩-এর ধারা ৬ ও ধারা ৭ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে সেই নির্দেশনা রংপুর নগরীসহ জেলার আট উপজেলা ও বিভাগজুড়ে এখনো মানা হচ্ছে না।