পীরগঞ্জে টিআর কাবিখা প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে জোড়াতালি দিয়ে

পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগঞ্জের শানেরহাট ইউনিয়নে টিআর কাবিখা প্রকল্পে নানা অনিয়মসহ তোঘলকি কারবার শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রকল্প চেয়ারম্যান হিসেবে এই অনিয়মের হোতা মর্মে অভিযোগ উঠেছে। বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প গুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রকল্পে কত টাকা বা চাল-গম বরাদ্দ তা এলাকাবাসী জানেন। প্রকল্পের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে সাইনবোর্ড টানানোর কথা থাকলেও কোন প্রকল্প এলাকাতেই সাইবোর্ড নেই।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের মতো শানেরহাট ইউনিয়নেও বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ঘোষপুর কবর স্থানে ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড ধরলাকান্দি গ্রামের সাহেব আলীর স’মিল সংলগ্ন ওয়াক্তিয়া মসজিদে প্রাচীর ও অজু খানা সংস্কারের জন্য ২ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও পুর্বের কাজকে নতুন কাজ হিসেবে দেখিয়ে কয়েকটি বসবার আসন বানিয়ে দায়সারা ধরনের কাজ করে সমদয় বরাদ্দ পকেটস্থ করছেন।
একই অভিযোগ উঠেছে ১ নম্বর ওয়ার্ডেও। সেখানে ড্রেন নির্মাণ কাজ হয়েছে নামমাত্র। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এই দুই প্রকল্পে তোঘলকি কারবার শুরু করেছেন ওয়ার্ড ইউপি সদস্যরা। ঘোষপুর কবর স্থানে প্রাচীর নির্মাণ বাবদ ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও এলাকাবাসী জানান শুধুমাত্র হাজার খানেক ইট দিয়ে ২০ হাত প্রাচীর নির্মান করা হয়েছে। তাও আবার পলেষ্টার করা হয়নি। কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে তাও জানেন না গ্রামবাসী। রাস্তার পাশে হওয়ায় সামান্য অংশ সিমেন্টের ঘোলা দিয়ে ঢেকে দিলেও প্রাচীরের অপর প্রান্তে তাও করা হয়নি। প্রকল্পের কাজ করেছেন ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ইউপি সদস্য নাজমুল হুদা রতন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কাজের কোন প্রাক্কলন না নিয়েই কাজের সমাপ্তি টেনেছেন। যে কারনে ওই প্রকল্পে প্রাক্কলেন সাথে কাজের কোন মিল নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার দর্শণ কুমার বাবু।
এ দিকে ধরলাকান্দি মধ্যপাড়ায় ইউপি সদস্য তারাজুল ইসলামের পিতা সাহেব আলী মসজিদ কমিটির সভাপতি হওয়ায় স’মিল সংলগ্ন মসজিদেও প্রাচীর সংস্কার ও অজুখানা সংস্কার বাবদ ২ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকার প্রকল্প দিয়ে সিংহভাগ তছরুপ করেছেন। পুরাতন প্রাচীরের উপর পলেষ্টার করে ঢেকে দিয়েছেন তাও আবার প্রকল্প শুরুর কয়েক মাস আগে। তবে কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে মসজিদটিতে তা জানেনা এলাকার লোকজন। মসজিদটির জমি দাতার ছেলে জানান দুই/তিন মাস আগে মসজিদের বারান্দার মেঝে ঢালাই ও পুর্বে নির্মিত প্রাচীরে পলেষ্টার করা ছিল। তবে কত টাকা বরাদ্দ আছে সেটা তিনি জানেন না। অপর দিকে ১ নম্বর ওয়ার্ডে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা ব্যায়ে ১’শ ৬০ ফুট ড্রেন নির্মাণ করার কথা থাকলেও ১’শ ফুট ড্রেন নির্মাণ করে কাজ শেষ করেছেন ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলু মিয়া।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিন তদন্তে গিযে এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করার পর অবশিষ্ট ৬০ ফুট ড্রেন নির্মানের নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে কথা হলে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তারাজুল মিয়া বলেন, কাজ হচ্ছে বলেই ফোন কেটে দেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, এগুলো আমাদের কাছে এলাকার লোকজন দিয়ে অভিযোগ করান। আমরা তাহলে দেখার সুযোগ পাবো। প্রকল্প গুলোতে বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেক দেয়া হয়েছে। সম্পুর্ন কাজ বুঝে নিয়ে বাকি টাকা দেয়া হবে।