১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ - ২৭ জুলাই, ২০২৪ - 27 July, 2024
amader protidin

তারাগঞ্জে বিদ্যালয়ের জমি দখল নিতে  আ’লীগ নেতা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চায়ের দোকান ভাংচুর ও মারধরের অভিযোগ

আমাদের প্রতিদিন
2 months ago
286


তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ

রংপুরের তারাগঞ্জে বিদ্যালয়ের জমি দখল নিতে একটি চায়ের দোকানের দোকানি ও তার স্ত্রীকে মারপিটসহ দোকান ভাংচুর করে তালা লাগিয়ে দিয়েছে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্য। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চায়ের দোকানী মজনু মিয়া বরাতী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দাখিল করলেও গত ৫দিনেও তদন্ত করেনি পুলিশ। চায়ের দোকানটি ওই পরিবারের একমাত্র ভরসা হওয়ায় দোকান বন্ধ থাকায় বর্তমানে মজনু মিয়া তার স্ত্রী—সন্তানকে নিয়ে অসহায় জীবন—যাপন করছেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বরাতী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশেই বরাতী চরকডাঙ্গা বাজারটি গড়ে উঠেছে। বিদ্যালয়ের কিছু জমি ও ব্যক্তি মালিকানার জমিতে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান ও গলামালের দোকান। ওই স্থানে নুরে আলম সরকারের নিজস্ব জমিতে ও বিদ্যালয়ের প্রায় ১ শতাংশ জমিতে চায়ের দোকান বসালে প্রায় ২০ বছর ধরে ভাড়া নিয়ে হতদরিদ্র মজনু মিয়া ও স্ত্রীসহ চায়ের দোকান করে আসছেন। গত ১৮ মে (শনিবার) চায়ের দোকানি মজনু মিয়া তার স্ত্রী চায়না বেগমকে সাথে নিয়ে জিলাপী, খোরমা, পুড়ি তৈরী করে বিক্রির করছিলেন। ওই দিন রাত আনুমানিক ১০টায় বরাতী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলীর নেতৃত্বে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মমিনুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, মাসুম মিয়াসহ ৬/৭ জন চায়ের দোকানে প্রবেশ করে মজনু মিয়া ও তার স্ত্রী চায়নাকে দোকান ঘর বন্ধ করতে হবে বলে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেন তারা। এসময় মজনু মিয়া ও স্ত্রী এর প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষকসহ তার লোকজন গালিগালাজের এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে মজনু ও তার স্ত্রী চায়নাকে মারপিট করে দোকান ভাংচুর করে দোকানেই তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এসময় দোকানের মালিক নুরে আলম সরকার খবর পেয়ে জরুরী সেবা *৯৯৯* নম্বরে  ফোন দিলে তারাগঞ্জ থানার এস আই আসাদুজ্জামান আসাদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থানে গিয়ে মজনু ও তার স্ত্রীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরের দিন ১৯মে (রবিবার) মজনু মিয়া থানায় গিয়ে প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। মজনু মিয়া জানান, বিদ্যালয়ের জমি দাবী করিয়া বরাতী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মমিনুর রহমান ও শহিদুল ইসলামকে সাথে নিয়ে এসে প্রায় ২বছর ধরে আমার নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে আসছেন। আমি এ টাকা দিতে অস্বীকার করিলে প্রায় সময় হুমকি—ধামকি দিয়ে আসছেন। তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক আওয়ামীলীগ নেতা হওয়ায় তিনি ও তার লোকজনের ভয়ে প্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত দোকান খুলতে পাইনি। দোকানটি একমাত্র ভরসা। বর্তমানে আমি স্ত্রী—সন্তানকে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছি। থানায় অভিযোগ দেয়ার গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৫ দিনেও পুলিশ তদন্ত করতে আসেনি। চায়ের দোকানের মালিক নুরে আলম সরকার বলেন, বিদ্যালয়ের জমিতে আরো অনেক দোকান ঘর রয়েছে। সেগুলো দিকে প্রধান শিক্ষকের নজর নেই। আর নিরহ দোকানিকে মার ধর করেন এঁা কেমন সভাব তার।

প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী জানান, ওই দোকান ঘরের কিছু অংশ বিদ্যালয়ের জমি আছে। তাই দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দোকানি ও তার স্ত্রীকে মারধর করা হয়নি। তার পরেও থানায় অভিযোগ করেছে আমার বিরুদ্ধে। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ছিদ্দিকুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা এ এস আই রুহুল আমিনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি আমাকে এখনো তদন্ত রিপোর্ট দেননি। অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।  

 

 

 

 

                                                   

সর্বশেষ

জনপ্রিয়