পীরগাছায় অর্থ না পেয়ে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে
পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগাছায় বাদির নিকট অর্থ না পেয়ে আদালতে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে অভিযোগ উঠছে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছাঃ সেলোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে। বিয়ে, ৫ মাস ঘর সংসার, হাসপাতালে চিকিৎসা ও চেয়ারম্যানের প্রত্যায়ন থাকার পরও বিবাদীর নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এমন প্রতিবেদন দাখিলে হতবাক বাদি ও গ্রামবাসীরা। তদন্ত কর্মকর্তা মোছাঃ সেলোয়ারা বেগম রংপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী কিশোরীর পিতা জহুরুল ইসলাম।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের কিসামত সুখানপুকুর গ্রামের বাবলু মিয়ার ছেলে মোন্তাছির রহমান মামুনের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সুখানপুকুর গ্রামের জহুরুল ইসলামের মেয়ে মোছা: জুঁই আক্তার। তারা গত ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারী রংপুর নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এফিডেভিট করে স্থানীয় মৌলভী দ্বারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর উভয় পরিবার বিষয়টি মেনে নিলে ৫ মাস মামুনের বাড়িতে ঘর সংসার করেন জুঁই আক্তার। সেই সাথে ৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চলতো জুঁইয়ের উপর শারিরিক নির্যাতন। এর এক পর্যায়ে গত ১৭/০৫/২০২৩ তারিখে আবারো যৌতুকের জন্য জুঁই আক্তারকে বেদম মারপিট করে তার স্বামী, শ^শুর ও বাড়ির লোকজন। পরে জুঁই আক্তারের পিতা মেয়েকে উদ্ধার করে পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং থানায় ৪ জনের নামে অভিযোগ দাখিল করেন। থানা পুলিশ অভিযোগ আমলে না নিলে অসহায় জুঁই আক্তার বাদি হয়ে জেলা রংপুরের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল—২ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং—০৭/২৪। মামলাটি সরেজমিনে অধিকর তদন্তের জন্য পীরগাছা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করলে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছাঃ সেলোয়ারা বেগম বাদির নিকট সঠিক তদন্ত পেতে হলে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। তার এ দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় তিনি তার মনগড়া ভাবে গত ২৬/০৫/২৪ তারিখে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দেন বলে দাবি করেন জহুরুল ইসলাম।
বাদির পিতা জহুরুল ইসলাম বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করার কথা। অথচ তদন্ত কর্মকর্তা তার নিজ দপ্তরে বসে বাদি ও স্বাক্ষীদের বক্তব্য শুনলেও ১নং আসামী উপস্থিত ছিল না। আমি গরীব মানুষ, সরকারের দেয়া বাড়িতে থাকি। তাই টাকা দিতে পারিনি বলে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। আমি ওই কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করছি।
বাদি জুঁই আক্তার বলেন, আমি ৫ মাস ঘর সংসার করলাম, ৩দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম, বিয়ের এফিডেভিট, চেয়ারম্যান সনদ থাকলেও তিনি কি করে বলেন, কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। আমি সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিবাদী মোন্তাছির রহমান মামুনকে পাওয়া যায় নি। তার বাবা বাবলু মিয়া বলেন, ওই মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তা সব শুনে রিপোর্ট দিয়েছে।
জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছাঃ সেলোয়ারা বেগম বলেন, সব সময় সরেজমিনে তদন্ত করা সম্ভব হয়না। তরিঘড়ি করে তদন্ত করায় এমন হয়েছে। তবে টাকা চাওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। আমি ছেলের পরিবার বলেছি মিমাংসা করে নিতে।