পীরগাছায় ছেলের অপরাধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বাবার উপর নির্যাতন! গুরত্বর অসুস্থ বাবা এখন হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের পীরগাছায় ছেলের কথিত চুরির অভিযোগের জেরে অসহায় বাবাকে বৈদ্যুতিক খুটির সাথে রশি দিয়ে বেঁধে দিনে-দুপুরে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনার পর নির্যাতিত সংকটাপন্ন বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৪ জুন বুধবার উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের দিকটারি নামক গ্রামে।
জানা যায়, তাম্বুলপুর গ্রামের সাঈদুল ইসলাম(৫৫) প্রতিদিনের মত ২৪ জুন(বুধবার) সকালে জমিতে গোখাদ্য (ঘাঁষ) সংগ্রহের জন্য যান। নির্যাতিত সাঈদুল ইসলাম জানান ঘাঁষ কাটার সময় আমার গ্রামের ছলিম উদ্দিনের ছেলে আয়নাল হক সকাল ৯ ঘটিকার দিকে তার দল-বলসহ বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে আমাকে চারদিক থেকে লাঠি পেটা করে ধরে নিয়ে আসে। এরপর আমার ছেলেকে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে আমাকে বৈদ্যুতিক খুটির সাথে রশি দিয়ে বেঁধে প্রায় ৬ ঘন্টা নির্যাতন করেছে।
তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলমগীরের কথিত চুরি যাওয়া গরু তার বাড়িতে। অপর দিকে নির্যাতিত সাঈদুল ইসলাম আর তার ছেলে আরিফুল ইসলাম দুই জন দুই বাড়িতে থাকেন এবং তাদের বাড়ির দুরত্বও আবার কম না। অথচ ছেলেকে চুরির অপবাদ দিয়ে অসহায় বয়োবৃদ্ধ বাবা সাঈদুল ইসলামকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। এদিকে অসহায় বাবাকে বৈদ্যুতিক খুটিতে রশি দিয়ে বেঁধে স্থানীয় আয়নাল, শফিকুল, সালাম মিস্ত্রি ও আরশাদসহ অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনে দফায়-দফায় পিটানোর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে রীতিমতো ভাইরাল করা হয়। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তীতে আব্দুল গফুর ও ফুলমিয়া মেম্বার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভিক্টিম সাঈদুল ইসলামকে ছেড়ে দেন। এ খবর লেখা পযন্তর্ ভিক্টিম সাঈদুল ইসলাম পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
সাঈদুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলেকে চুরির অপবাদ দিয়ে আমাকে যেভাবে রশি দিয়ে বেঁধে পিটানো হলো তাতে আমার বেঁচে থাকার চেয়ে আত্মহত্যা করাই ভালো।
সাঈদুল ইসলামের মেয়ে সাবিনা বেগম বলেন, আমার বাবাকে যখন ধরে নিয়ে যায় তখন আমি আমার বাবাকে উদ্ধার করতে গেলে শফিকুল ইসলাম সকলের উদ্দেশ্য বলে ওকেও ধরে নিয়ে আস সবাই মিলে গণধর্ষণ করা হবে। তখন ভয়ে আমি এবং আমার মা আর উদ্ধারের চেষ্টা করতে পারি নাই। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগতেছি।
তাম্বুলপুর ইউনিয়ন বিট পুলিশ অফিসার শাহ নেওয়াজ জানান, ওই রকম ঘটনা শুনেছি, খোজ নিয়ে দেখেন স্থানীয়ভাবে আপোষ হয়ে গেছে। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আপোষ না হলে অভিযোগ দিতে বলেন, তখন আমরা যাব।