সচিবালয়ে ঢুকে পড়া শিক্ষার্থীদের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর লাঠিপেটা

আমাদের ডেস্কঃ
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সব বিষয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ‘বৈষম্যহীন’ ফল প্রকাশ ও ত্রুটি সংশোধনের দাবিতে সচিবালয়ে ঢুকে পড়া শতাধিক শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে বের করে দিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এসময় ৫৪ জন ছাত্রকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিকেল তিনটার দিকে ফল প্রকাশ ও ত্রুটি সংশোধনের দাবিতে শতাধিক শিক্ষার্থী পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের বের করে দেয়। এর আগে শিক্ষার্থীরা ছয় নম্বর ভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘিরে রাখে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই; উই ওয়ান্ট জাস্টিস; মুগ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই; তুমি কে আমি কে ছাত্র-ছাত্র; আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম-সংগ্রাম ইত্যাদি স্লোগান দেন। তখন আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের স্লোগান বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানান সচিবালয়ে দায়িত্বরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু তারা সরে না যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের ধাওয়া দেন। এ সময় তাদের লাঠিপেটাও করা হয়। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী সদস্যদের তাড়া খেয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে সচিবালয়ের ভেতরে আটকা পড়েন বেশকিছু শিক্ষার্থী। তাদের আটক করে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়েছে।
একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আমরা সমতার ভিত্তিতে ফলাফল চাই। বোর্ড থেকে কাউকে ভালো ফলাফল দেওয়া হয়েছে আর কাউকে কম। অথচ আমরা ভালো লিখেছি। আমরা চাই দ্রুত সময়ে এই ফলাফল বাতিল করে বঞ্চিতদের পুনরায় মূল্যায়ন করা হোক।
১৫ অক্টোবর এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। স্থগিত হওয়া বিষয়গুলোর পরীক্ষা আন্দোলনের মুখে বাতিলের কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন হয়েছে ভিন্ন পদ্ধতিতে। বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর মূল্যায়ন হয়েছে পরীক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং)। অর্থাৎ এসএসসিতে যে শিক্ষার্থী যত নম্বর পেয়েছিলেন, সেটা এইচএসসিতে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আর এইচএসসিতে যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়েছিল, সেগুলোর উত্তরপত্রের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হয়েছে। এ দুই মূল্যায়ন মিলে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করা হয়েছে।
তাদের দাবি, ত্রুটিপূর্ণ ও বৈষম্যমূলক ফল বাতিলসহ দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে সমভাবে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে পুনরায় ফল প্রকাশ করতে হবে। ওই চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও যশোর শিক্ষা বোর্ডে ফল বাতিল করে সবাইকে পাস করিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি করে এইচএসসিতে ফেল করা শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।