নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প
ফাইল ফটো
আমাদের ডেস্কঃ
ট্রাম্পের জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে ব্যবসা-বাণিজ্য আর শোবিজ নিয়ে। তবে হঠাৎ করেই রাজনীতির মাঠে আসা ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও তার ব্যক্তি জীবনের মতোই আলোচিত এবং সমালোচিত। একটা সময়, ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছে বলেই যখন ধরে নেওয়া হচ্ছিলো, ঠিক তখনই আবারো প্রবল প্রতাপে ফিরে আসেন মার্কিন নির্বাচনের লড়াইয়ে। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে আবারো লড়াই করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী এই ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আমেরিকার রাজনীতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প মানেই আলোচনা-সমালোচনা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার অনেক আগে থেকে মার্কিন সমাজে ট্রাম্প একজন ধনকুবের হিসেবে পরিচিত। তার জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে ব্যবসা-বাণিজ্য আর শোবিজ নিয়ে।
২০১৫ সালের ১৫ জুন কোটিপতি ব্যবসায়ী ট্রাম্প আচমকা প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করে বসেন। তার এই ঘোষণাকে খুব কম লোকই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিলেন। তবে ট্রাম্প তার লক্ষ্যে স্থির ছিলেন। ব্যবসায়ী থেকে পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ বনে যান তিনি।
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সব ভবিষ্যদ্বাণী মিথ্যা প্রমাণ করেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির হিলারি ক্লিনটনকে নাটকীয়ভাবে পরাজিত করে হোয়াইট হাউসে যান ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার প্রথম ঘণ্টা থেকেই তার কার্যকালে বারবার নাটকীয়তা দেখা গেছে। মুসলিম নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন বিষয়ে একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। অভ্যন্তরীণ নীতির মতো ট্রাম্পের বৈশ্বিক নীতিও ছিলো দারুণ গোলমেলে। এর মধ্যেই দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন করার ইচ্ছার কথা জানিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনি তৃতীয় প্রেসিডেন্ট যাকে অভিশংসিত হতে হয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কোনও বিষয় খুঁজে বের করার জন্য বিদেশি সরকারকে চাপ দিয়েছিলেন। ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি পরিষদে তাকে অভিশংসিত করা হলেও রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন সিনেটে তিনি খালাস পান।
২০২০ সালেও তিনি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য রিপাবলিকান প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত জো বাইডেনের কাছে ৭০ লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তিনি। সে সময় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকার করেন ট্রাম্প। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে তার সমর্থকদের নিয়ে সমাবেশ করেন। ওই সমাবেশের পরই তার সমর্থকরা ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায়। ওই ঘটনায় দ্বিতীয়বার অভিশংসিত হতে হয় ট্রাম্পকে। যদিও এবারও তাকে বেকসুর খালাস করে সেনেট। ক্যাপিটল ভবনে হামলার পর ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে বলেই অনুমান করেছিলো সকলে। দাতা এবং সমর্থকরা আর কখনও তাকে সমর্থন করবেন না বলে শপথ করেছিলেন।
এরপর, ২০২২ সালের মধ্যবর্তী মার্কিন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হিসাবে নিজ দলের মনোনয়ন চেয়ে লড়াইয়ে নামেন ট্রাম্প। ক্রমে অন্যান্য রিপাবলিকান সদস্যদের মনোনয়নের দৌড়ে পেছনে ফেলেন তিনি। চারটে ফৌজদারি মামলায় ৯১টা গুরুতর অভিযোগের মুখোমুখি হয়ে নির্বাচনী দৌড় শুরু করেন তিনি। ৭৮ বছরের এই রিপাবলিকান আবারও সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে, দ্বিতীয়বার ফয়সালার অপেক্ষায়।