ইসলামে তালাক ও তালাকে করণীয়
আমাদের ডেস্কঃ
তালাক দেয়ার বিষয়টি আল্লাহ তাআলা’র কাছে সবচেয়ে অপছন্দের। তালাক মানে ছেড়ে দেয়া। ইসলামী শরিয়তে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ বিচ্ছেদকে তালাক বলা হয়। ইসলামে তালাক দেয়া বৈধ হলেও অনুৎসাহিত করা হয়েছে। যৌক্তিক কারণে তালাক দেয়া হলে এর কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। অনেকে মনে করেন রাগের মাথায় তালাক দিলে তালাক হয় না। আসলে তালাক তো দেওয়াই হয় রাগের মাথায়। কয়জন আছে, শান্তভাবে তালাক দেয়! মূলত রাগের অবস্থায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যায়, এমনকি হাস্যরস বা ঠাট্টাচ্ছলে তালাক দিলেও তা পতিত হয়ে যায়। এ ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন,
ثَلاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ : النِّكَاحُ ، وَالطَّلاقُ ، وَالرَّجْعَةُ তিনটি বিষয় এমন রয়েছে যা রাগ হোক বা হাসি ঠাট্টায় হোক সর্বাবস্থায় কার্যকরী হয়ে থাকে। বিবাহ, তালাক ও রজয়াত। (আবু দাউদ ২১৯৪ তিরমিজি ১১৮৪) তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন পুরুষকে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুণরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। (সুরা বাকারা-২৩০)
রাগের মাথায় তালাক দিলে করণীয় কী- রাগের মাথায় স্ত্রীকে তিন তালাক দেয়ার পর উক্ত স্ত্রীর সাথে সংসার করার কোন সুযোগ আর বাকি থাকে না। তাই যদি উক্ত স্ত্রী তালাক প্রাপ্তা হবার পর ইদ্দত শেষে অন্য কোথাও বিয়ে হয়, তার সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার করতে থাকে, তারপর দ্বিতীয় স্বামী কোন কারণে মারা যায় বা তালাক প্রদান করে। তাহলে ইদ্দত শেষে প্রথম স্বামী আবার বিয়ে করতে পারবে। এছাড়া দ্বিতীয় কোনো উপায় শরিয়তে নেই। হযরত নাফে রহ. বলেন, যখন হযরত ইবনে উমর রা. এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া’ (রুজু করা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো, উত্তরে তিনি বলেন, যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে ‘রুজু’ (তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা) করতে পার। কারণ, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন। যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ না করা পর্যন্ত। (বুখারি-২/৭৯২, ২/৮০৩) কিছুক্ষণ পর ইবনে আব্বাস রা. বলেন, তোমাদের অনেকে নির্বোধের মত কাজ করে, (তিন তালাক দিয়ে দাও!) তারপর ‘ইবনে আব্বাস! ইবনে আব্বাস! বলে চিৎকার করতে থাক। শুনে রাখ আল্লাহ তাআলার বাণী, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে আল্লাহ তাআলা তার জন্য পথকে খুলে দেন। তুমিতো স্বীয় রবের নাফরমানি করেছো (তিন তালাক দিয়ে)। এ কারণে তোমার স্ত্রী তোমার থেকে পৃথক হয়ে গেছে। (আবু দাউদ-১/২৯৯, হাদিস ২১৯৯, সুনানে বায়হাকি কুবরা, হাদিস ১৪৭২০, সুনানে দারা কুতনি ১৪৩)