৯ আশ্বিন, ১৪৩২ - ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ - 25 September, 2025

ফুলবাড়ীতে কলেজ ছাত্র সাঈদের আয়ের উৎসই আতর-টুপি বিক্রি করা

আমাদের প্রতিদিন
6 months ago
193


আব্দুল আজিজ মজনু, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম):   

“ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়” আজ এই চিরন্তন বাক্যটি পাথেও হয়ে দাড়িয়েছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার পূর্ব-ফুলমতি গ্রামের দিনমজুর ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে সাঈদের বেলায়। অদম্য শক্তি যেন তাকে আগামীর স্বপ্ন তার দ্বারে উকি মারছে।

জানাগেছে, উপজেলাসহ জেলার হাট-বাজার ও ফেসবুক ও বিভিন্ন অনলাইন প্লাাটফর্মে জনপ্রিয় একটি নাম ঘুরছে আতর ওয়ালা সাঈদ। পুরো নাম সাইদুল ইসলাম সাঈদ। অভাব অনটন দমাতে পারেনি দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া সাঈদকে। পড়ালেখার পাশাপাশি আতর ও টুপির ব্যবসা করে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি। এখন কোথাও দোকান সাজিয়ে বসলেই পরিচিতির কারণে আতর-টুপি কিনতে ভীর জমায় ক্রেতারা। তিনি বর্তমানে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। প্রায় চার বছর ধরে আতর বিক্রি করেই সবকিছু চলছে। অসুস্থ বাবার চিকিৎসা ও পরিবারের দেখভালের পাশাপাশি চলছে তার পড়াশোনা। কলেজে ক্লাসের পর আতর টুপি তসবিহ নিয়ে বিক্রির জন্য বেরিয়ে পড়েন সাঈদ। তিনি কলেজের ক্লাশ শেষে রুটিন করে জেলা শহর, নিজ এলাকার বালারহাট বাজার, বিভিন্ন মাদরাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আতর, টুপি ও তসবিহ বিক্রি করেন। এতে প্রায় তার প্রতিদিনই পাঁচ থেকে ছয়শ টাকা আয় হয়। কোথাও বড় কোন প্রোগ্রাম হলে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা আয় হয়। আতর-টুপির ব্যাবসা করেই পরিবারে স্বস্থি ফিরে এসেছে তার।

অতীতের স্মৃতিচারণ করে সাঈদ জানান, অনার্সে ভর্তির পর অর্থের অভাবে পড়ালেখা বন্ধের উপক্রম হয়েছিল। পরে নিজের পড়ালেখার খরচ জোগাতে স্থানীয় এক বড়ভাইয়ের সহযোগিতায় আতর ও টুপির ব্যবসা শুরু করেছিলেন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আজ বৃহৎ পরিসরে ব্যবসা পরিচালনার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

তিনি আরও জানান, তিন ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। বড় ভাই স্ত্রী সন্তান নিয়ে আলাদা থাকেন। ছোট বোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। বাবা ফয়েজ উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে আক্রান্ত। মা সাহেরা বেগম স্থানীয় চালকলে শ্রমিকের কাজ করতেন। অসুস্থ স্বামীর সেবা যত্নের কারণে চালকলের কাজও ছেড়ে দেন সাহেরা বেগম। পরে এই ছোট্ট ব্যবসা চালিয়ে নিজের ও ছোট বোনের পড়াশোনার খরচসহ পরিবারের ভরণপোষনের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth