চিলাহাটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অনিয়ম দুর্নীতির বিভাগীয় তদন্ত

মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, ডোমার নীলফামারী:
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ১নং ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের চিলাহাটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার ২৪ সেপ্টেম্বর রংপুর শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিচালক প্রফেসর আমির আলীর নেতৃত্বে ৩ সদস্য টিমের কর্মকর্তাদের নিয়ে সরেজমিনে তদন্তে আসেন। তদন্ত টিমের অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন, উপ শিক্ষা পরিচালক সাদাকাত হোসেন, গবেষণা কর্মকর্তা রেজাউল করিম।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চাহিদার চেয়ে কম জমির উপর চিলাহাটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই একই জমির উপরে গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। একই মাঠে থাকা ১৯৪২ সালে ৭৮ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত চিলাহাটি মার্চেন্টস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বর্তমানে চিলাহাটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের দখলে থাকায় মার্চেন্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য মাত্র ২৭ শতাংশে জমি রয়েছে। একাধিক অভিযোগ থাকার পরও সীমানা নির্ধারণের তাল বাহানা করায় প্রাথমিক বিদ্যালয় তাদের বরাদ্দকৃত ভবন স্থাপন করতে পারছে না।
একসময় চিলাহাটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ুব আলীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন চিলাহাটি মার্চেন্টস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা থাকাকালীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তর-পশ্চিমে একটি কক্ষ এবং ৮৪ জোড়া বেঞ্চ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ দখল করে নেয়। এছাড়াও তাহার সহযোগিতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেণিকক্ষকে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি করে পরবর্তীতে সংস্কারের নাম করে ক্যান্টিন নির্মাণ করে। সে সময় নীলফামারী-০১ ডোমার -ডিমলা আসনের সংসদ সদস্য জাফর ইকবাল সিদ্দিকীর দেওয়া একটি ছাত্রী নিবাস বিক্রি করার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের ২ লক্ষাধিক টাকার কাঁঠাল গাছ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অপরদিকে স্থানীয়রা অধ্যক্ষ আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য অভিযোগ তুলেন। তদন্ত চলাকালীন সময় স্থানীয়রা মৌখিক ভাবে অনিয়মের বিষয়গুলো তুলে ধরার পাশাপাশি লিখিতভাবে অভিযোগের কপি তুলে দেন তদন্ত কর্মকর্তার হাতে।
এবিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা রংপুর বিভাগীয় শিক্ষা পরিচালক প্রফেসর আমির আলী জানান, অভিযোগের বিষয়গুলি উভয় পক্ষের কাছে শুনেছি এবং ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করে দেখেছি। ছাত্রীদের পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন জনের কাছেও মতামত নিয়েছি। সরেজমিনের তদন্তে অভিযোগকারীর মন্তব্য অধ্যক্ষ মহোদয়ের লিখিত বক্তব্য এবং আমার মতামত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়ে দিব। এরপরে যা সিদ্ধান্ত হবে বা কর্তৃপক্ষ নেবে সেটা তাদের ব্যাপার।
অপরদিকে তদন্ত প্রক্রিয়া ও তদন্ত কমিটির গতিবিধি দেখে স্থানীয় অভিযোগকারীরা হতাশা এবং সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন তদন্ত কমিটি যেভাবে তদন্ত কার্য চালাচ্ছেন তাতে আমাদের অভিযোগের কোন মূল্যায়ন হবে বলে মনে হচ্ছে না। যদি এই অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার আমরা না পাই তাহলে আগামীতে মানববন্ধন সহ গণস্বাক্ষরিত স্মারকলিপি শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রেরণ করবো।