ডেঙ্গু হলে কী খাওয়া যাবে, কী খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
আমাদের ডেস্কঃ
দেশব্যাপী বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রভাব ও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। বড়দের পাশাপাশি বাচ্চারাও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। এ রোগের বড় সমস্যা হলো প্লেটিলেট কমে যাওয়া। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কারও কারও খুব দ্রুত প্লেটিলেট কমে যায়। এ অবস্থায় দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন বা হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। ডেঙ্গু জ্বরে দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য প্রয়োজন সুষম খাদ্য গ্রহণ। এ সময় কী খাওয়া যাবে আর কী খাওয়া যাবে না?
খাওয়া যাবে-
কমলা/লেবু: লেবু, কমলা ও কমলার রস ডেঙ্গু জ্বরে ভালো কাজে আসতে পারে। কারণ এটিতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিওক্সিডেন্ট। আর এই দুটি উপাদান ডেঙ্গু জ্বর নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করে।
ডাবের পানি: ডেঙ্গুর জ্বর হলে শরীরে তরল পদার্থের শূন্যতা সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় ডিহাইড্রেশন। এ সময় বেশি বেশি করে ডাবের পানি পান করলে উপকার পাওয়া যাবে। কেননা ডাবে রয়েছে ইলেক্ট্রোলাইটসের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি।
পেঁপে পাতার জুস: ডেঙ্গু জ্বর হলে রোগীর শরীরে কমে যেতে পারে প্লেটলেট। তাই এ সময় আপনার উপকার করতে পারে পেঁপে পাতা। পেঁপে পাতায় পাপাইন এবং কিমোপেইনের মতো এনজাইম সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি করেতে পারে প্লেটলেটের পরিমাণও। সেজন্য আপনাকে প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ এমএল পেঁপে পাতার তৈরি জুস খেতে হবে। আপনি ঘরে বসেই তৈরি করতে পারবেন এ জুস।
হলুদ: ডেঙ্গু জ্বরে কাজে আসতে পারে হলুদও। এর জন্য আপনাকে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে পান করতে হবে। এটি আপনাকে অতি দ্রুত সুস্থ্য করে তুলবে।
মেথি: ডেঙ্গু জ্বর হলে কাজে আসবে মেথি। এটি আপনাকে অতি সহজে ঘুমিয়ে যেতে সহায়তা করেবে। সেই সঙ্গে সহয়তা করবে অতিরিক্তমাত্রার জ্বর কমিয়ে আনতে। তবে মেথি গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরমার্শ করে নিতে হবে।
ব্রকলি: ব্রকলি হলো ভিটামিন কে’র একটি ভালো উৎস। অন্যদিকে ভিটামিন কে রক্তের প্লেটিলেট বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ সমৃদ্ধ। যদি কোনো ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন; তাহলে অবশ্যই বেশি করে ব্রকলি খাবেন।
পালংশাক: পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে আইরন এবং ওমেগো-থ্রি ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। এটি আবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেতে সহায়তা করে। এই শাকটি বেশি করে গ্রহণ করলে অতি দ্রুত প্লেটিলেট বৃদ্ধি পায়।
কিউইফল: কিউইফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে এটিতে পটাশিয়ামও রয়েছে। এই ফলটি বেশি খাওয়ার ফলে ইলেক্ট্রোলাইট স্তর এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ ফলটি খেলে লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
এগুলো ছাড়াও টমেটো, বিট, সবুজ শাকসবজি, লাল আঙ্গুর, সবুজ-চা খাওয়া দরকার। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের জন্য মটরশুটি, ছোলা, মসুর ডাল, ডিম, মাছ, কলিজা, দুধ, দই, কাজুবাদাম প্রোটিনের ভালো উৎস।
ডেঙ্গু জ্বরে যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত- এই খাবারগুলো খেলে উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।
মসলাযুক্ত খাবার: ডেঙ্গু রোগীর জন্য অবশ্যই মসলাযুক্ত খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। এই ধরনের খাবার বেশি করে খেলে পাকস্থলীর দেয়াল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ক্যাফিনযুক্ত পানীয়: ডেঙ্গু হলে তরল খাবার বেশি করে খেতে হবে। সেই সঙ্গে ক্যাফিনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। এই খাবারগুলো হার্ট রেট বাড়িয়ে দিতে পারে। সেই সঙ্গে ক্লান্তি নিয়ে আসতে পারে।
ডেঙ্গু হলে অনেক সময় শরীরে প্রচুর পানির ঘাটতি তৈরি হয়। এই ঘাটতি পূরণ করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে আদা পানি গ্রহণেরও পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ এটি অনেক ডেঙ্গু রোগীর বমি বমি ভাব মোকাবিলায় সহায়তা করে। কখনও কখনও শরীরের পানিশূন্যতা পূরণে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ওআরএস) গ্রহণের পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। এটি শরীরে অত্যাবশ্যক পটাসিয়াম সরবরাহ করে।